নন্দন দত্ত, সিউড়ি: নরেন্দ্র মোদির জনসভায় বীরভূম থেকে সমর্থক নিয়ে যেতে তৃণমূল বাধা দিলে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হবে বিজেপি। রবিবার জেলা কমিটির বৈঠকে তাই কর্মীদের নির্ভয়ে ব্রিগেডে যাওয়ার জন্য বাস থেকে ছোট গাড়ি ভাড়া করার নির্দেশ দিলেন বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নাম না করে তিনি বলেন, “এখানে এক নেতা আছেন যার মাথায় অক্সিজেন কম যায়, এর আগে তিনি সমাজবিরোধীদের দিয়ে আমাদের সভায় সমর্থকদের আসতেও বাধা দিতেন। তাঁর ভয়ে বাস মালিকরা বাস দিত না। কিন্তু, এবার তা হবে না। নির্বাচনের আগে যে সভা হয় তাতে শাসকদল বা তার গুন্ডাবাহিনী যাতে তাতে বাধা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য আগে থেকেই আমরা কমিশনের দ্বারস্থ হব।” তাঁর আরও দাবি, কর্মীরা ট্রেনে ও বাসে নির্ভয়ে ৩ এপ্রিল ব্রিগেডের সভায় যাবেন।
[আরও পড়ুন- কঠিন প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে রবিবাসরীয় প্রচারে রাহুল-লকেট ]
সিউড়িতে আয়োজিত বিজেপির কর্মী সম্মেলনের মঞ্চ থেকে প্রতাপের পাশাপাশি তৃণমূলকে আক্রমণ করেন বীরভূম কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দুধকুমার মণ্ডলও। তিনি বলেন, “তৃণমূল আক্রমণ করলে বিজেপি কর্মীরা জগাই মাধাই সেজে হাত তুলে পিঠ পেতে দেবে না। পালটা প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। ওই সব ছেড়ে এখন কমিশনের নকুলদানার উত্তর দিক অনুব্রত। কারণ নকুলদানার নাম করে পরোক্ষে ভোটারদের হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন তৃণমূল জেলা সভাপতি।”
[আরও পড়ুন- ধর্মীয় স্থানে গিয়ে জনসংযোগে জোর মমতাবালা ও মৃগাঙ্কর ]
যদিও এপ্রসঙ্গে অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “কে পুকুর পাড়ে, গোয়ালঘরে, রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে কিংবা ঠেকে বসে কর্মীদের কী নির্দেশ দিল তাতে আমার কিছু যায় আসে না। অমন রাজ্য স্তরের বহু নেতা জেলায় এসে বকুনি ঝেড়ে যায়। বাস মালিকরা যদি বাস না দেয় আমার কী বলার আছে ?”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এর আগে এই জেলায় বিজেপির বেশিরভাগ জনসভার সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। এমনকী সিউড়িতে সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের জনসভায় পাশের রাজ্য ঝাড়খণ্ড থেকে বাস ভাড়া করে সমর্থকদের আনতে হয়েছিল বিজেপিকে। সেকথা মাথায় রেখে রবিবার সিউড়ি সাহিত্য পরিষদের সভায় প্রতাপবাবু বলেন, “শুধু দক্ষিণবঙ্গের কর্মীদের নিয়ে নরেন্দ্র মোদি ব্রিগেডে সভা করবেন।” সঠিক সংখ্যা না জানালেও বীরভূম থেকে কয়েক লক্ষ কর্মী সমর্থক সেদিন ব্রিগেড যাবেন বলে জানিয়েছে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। তাদের দাবি, বাংলায় সব রাজনৈতিক দলকে গণতান্ত্রিকভাবে সভা করার অধিকার দিতে হবে।
রবিবার অনুব্রতর জেলায় এসে তৃণমূলকেই হুমকি দেন প্রতাপ। বলেন, “বিজেপির প্রার্থী দুধকুমার মণ্ডলকে দেখে তৃণমূলের ভয় এসে গিয়েছে। জেলা সভাপতি স্বপ্নেও ভয় পাচ্ছেন, তাই হতাশ হচ্ছেন। তবে একটু বেফাঁস কথা বললেই তাঁর বিরুদ্ধে কমিশনের যাব।” একথা শুনে অনুব্রত বলেন, “হাতি ঘোড়া গেল তল। কে আমার বিজেপির রাজ্য সম্পাদক। ভোটের ফলাফলের দিন ওর সঙ্গে কথা হবে।”
ছবি: সুশান্ত পাল
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.