শুভদীপ রায় নন্দী, শিলিগুড়ি: শহরে একটি অনাথ আশ্রম চালাতেন। বিভিন্ন প্রয়োজনে যতবারই কাউন্সিলরের কাছে গিয়েছেন, ততবারই কুপ্রস্তাব পেয়েছেন। শিলিগুড়ি পুরনিগমের তৃণমূল কাউন্সিলর রঞ্জন শীলশর্মার বিরুদ্ধে এই অভিযোগই তুললেন এক মহিলা সমাজকর্মী। কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দায়ের করেছেন তিনি।
২০১৫ সালে পুর নির্বাচনের শিলিগুড়ি শহরের ৩৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন তৃণমূল কংগ্রেসের রঞ্জন শীলশর্মা। ওই ওয়ার্ডেরই রবীন্দ্র সরণির মধ্য চয়নপাড়া এলাকায় একটি অনাথ আশ্রম চালাতেন অভিযোগকারিনী মহিলা। তাঁর দাবি, ভোটে জেতার আনন্দে যখন নবনির্বাচিত কাউন্সিলরকে আশ্রমের অনাথ শিশুদের খাওয়ানোর অনুরোধ করেন, তখন তাঁকে কুপ্রস্তাব দেন রঞ্জন শীলশর্মা। তখন অবশ্য বিষয়টিকে তেমন আমল দেননি ওই মহিলা। উলটে ২০১৬ সালে হোম চালাতে গিয়ে সমস্যায় পড়ে ফের কাউন্সিলর রঞ্জন শীলশর্মারই দ্বারস্থ হন তিনি। অভিযোগ, সেবার ফোনে ওই মহিলাকে আবারও কুপ্রস্তাব দেন শিলিগুড়ি পুরনিগমের ওই কাউন্সিলর। শেষপর্যন্ত প্রয়োজনীয় অনুমতি না থাকায় ওই হোমটি বন্ধ করে দেয় শিশুকল্যাণ সমিতি। হোমে যারা থাকত, তাদের জলপাইগুড়িতে শিশুকল্যাণ সমিতির নিজস্ব হোমে স্থানান্তরিত করা হয়।
এদিকে কাউন্সিলর রঞ্জন শীলশর্মা যে তাঁকে কুপ্রস্তাব দিয়েছেন, সে বিষয়ে তখন থানার আর অভিযোগ করেননি ওই মহিলা সমাজকর্মী। তাহলে এখন কেন এফআইআর করলেন? অভিযুক্ত কাউন্সিলর রঞ্জন শীলশর্মার বিরুদ্ধে কুপ্রস্তাব ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন শিলিগুড়ি শহরের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকা। থানায় অভিযোগও দায়ের করেছেন তিনি। ওই মহিলা সমাজকর্মীর দাবি, এই ঘটনায় তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পেয়েছেন তিনি। তাই ঘটনার তিন বছর পর রঞ্জন শীলশর্মার কুকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালেন।
শিলিগুড়ি পুরনিগমের দীর্ঘদিনের কাউন্সিলর রঞ্জন শীলশর্মা। শহরে যথেষ্ট দাপুটে ও প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা হিসেবেও পরিচিত তিনি। সরকারি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকার অভিযোগের প্রেক্ষিতে পালটা আদালতের মামলা করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন অভিযুক্ত কাউন্সিলর রঞ্জন শীলশর্মা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.