Advertisement
Advertisement

সপরিবারে জেলবন্দি কাউন্সিলর, পোষ্যকে সামলাতে গিয়ে নাজেহাল পুলিশ

পুলিশ-সারমেয় সম্পর্কে নয়া রসায়ন।

TMC councilor in jail, cops care dog
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:March 4, 2019 4:25 pm
  • Updated:March 4, 2019 4:27 pm  

ধীমান রায়,কাটোয়া: খুনের মামলায় সপরিবারে কারাবন্দি কাটোয়ার এক কাউন্সিলর। ফাঁকা বাড়ি সামলাচ্ছে তাঁর আদরের পোষ্য টনি। আর টনিকে সামলাচ্ছে কাটোয়া থানার পুলিশ। স্রেফ মানবিকতার খাতিরে। বছর খানেক ধরে কাউন্সিলরের পোষ্যের সঙ্গে পুলিশের এমনই ভিন্ন সম্পর্কের রসায়ন তৈরি হয়েছে।

২০১৬ সালের ২ অক্টোবর কাটোয়ার হরিপুরে সাবির শেখ নামে এক দুষ্কৃতীকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত ১৩ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর জঙ্গল শেখ ও তার ছেলে সাদ্দাম। ওই খুনের ঘটনার দু’সপ্তাহের মধ্যেই জঙ্গলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তখন ফেরার ছিল কাউন্সিলরের ছেলে সাদ্দাম। কয়েক মাস পরে ধরা পড়ে সে। ২০১৭ সালের জুলাই মাসে জঙ্গেলের স্ত্রী আনহারা ওরফে বুড়ি বিবিকে গাঁজা সহ গ্রেপ্তার করে কাটোয়া থানার পুলিশ। জানা গিয়েছে, কাউন্সিলরের ৭ বছরের এক পালিত পুত্র আছে। সে এখন জঙ্গলের মেয়ের বাড়িতে। আর জঙ্গল শেখের বাড়িতে একা তার পোষ্য টনি। এই কুকুরের দেখভালের দায়িত্ব এখন বর্তেছে পুলিশের উপর। প্রায় দু’বছর ধরে জঙ্গলপোষ্য টনির ভরনপোষণে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে কাটোয়া থানার পুলিশ। সেই কাজ করতে গিয়েই কার্যত নাজেহাল অবস্থা পুলিশকর্তাদের।

Advertisement
[নোটিস ছাড়াই চা বাগানের ঝাঁপ বন্ধ, অনিশ্চিত ১২০০ শ্রমিকের ভবিষ্যৎ]

খয়েরি, কালো ছোপ ভরতি গা, চেহারা দশাশই। জাতে আ্যলসেশিয়ান, স্বভাবে রাশভারী। এই টনিকে নিয়ে কার্যত ঘুম ছুটেছে পুলিশের। দু’বেলা করে তাকে খাবার পৌঁছে দেওয়া, স্নান করানো – থানার কাজের বাইরে এসবও সামলাতে হচ্ছে পুলিশকে। মালিক, মালকিনের সঙ্গ অনেকদিন পাচ্ছে না টনি। তাই মেজাজও সবসময়েই সপ্তমে চড়ে রয়েছে সাড়ে তিন বছরের অ্যালসেশিয়ানের। পান থেকে চুন খসলেই, কামড় অবধারিত। তাই বাধ্য হয়েই টনিকে তোয়াজ করে রাখতে হচ্ছে।

katwa-dog

প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, ২০১৫ সালে টনির যখন সবে ১০ দিন বয়স, তখন তাকে কিনেছিল জঙ্গল শেখ। রোজ সকাল-বিকেল পোষ্যকে নিয়ে জঙ্গল বেড়াতে বেরোতেন। এই সারমেয়টি তার খুব প্রিয় ছিল। আর এখন বাড়ির উঠানে খাঁচাবন্দি হয়ে রয়েছে টনি। মাঝেমধ্যেই তার গর্জন শোনা যায়। পুলিশ সূত্রে খবর, কাটোয়া থানা থেকে রোজ নিয়ম করে টনির খাবার নিয়ে যান পুলিশকর্মীরা। ভাতের সঙ্গে মাংসের ছাঁট দিলে, তবেই সে ভালভাবে খায়। এমনকী বাড়িতে পাম্প চালিয়ে টনিকে স্নানও করাতে হয় পুলিশকেই। ঘরের ভিতরে সে শৌচকর্ম করে, সেসবও রোজ রুটিনমাফিক পরিষ্কার করে দেওয়া হয়।এক পুলিশ কর্মী জানিয়েছেন, জেলবন্দি অবস্থায় জঙ্গল শেখ বারবার তার আদরের টনির খোঁজ নেয়। মাঝেমধ্যে কেঁদেও ফেলে পোষ্যর জন্য।কাটোয়া থানার এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রথম প্রথম টনি তাঁদের প্রতি বিরক্ত হত। এখন পুলিশকর্মীদের সঙ্গে অনেকটাই বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছে। এমনিতেও পুলিশের সঙ্গে কুকুরের সুসম্পর্ক নতুন কিছু নয়। অপরাধ দমনে পুলিশকে নিজের দক্ষতা, বুদ্ধিমত্তা দিয়ে সাহায্য করে থাকে কুকুর। তবে মাঝেমধ্যে মেজাজ হারিয়ে ফেলে টনি। কিন্তু পুলিশ জানাচ্ছে, মানবিক কারণেই তাঁরা জঙ্গল শেখের পোষ্যের প্রতি দেখভাল করছেন। পুলিশের সঙ্গে পোষ্যের এই সম্পর্ক এখন কাটোয়াবাসীর কাছে নতুন এক চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ছবি: জয়ন্ত দাস

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement