রিন্টু ব্রহ্ম, কালনা: কোনও এক সংস্থা আন্তর্জাতিক নারী দিবসের অনুষ্ঠান করছে। মঞ্চে কেউ যেন নারীর অধিকার, নারীর সুরক্ষা নিয়ে বক্তব্য রাখছেন। নেতারাও হাজির সেখানে। আর সেই সময়ই এক নারী আক্রান্ত হলেন এক কাউন্সিলরের হাতে। অভিযোগ, রাস্তা আটকে ইট-বালির লরি রেখে ব্যবসার করার প্রতিবাদ করায় থানার মহিলা কনস্টেবলকে মাটিতে ফেলে পেটানো হয়। শাসকদলের ওই কাউন্সিলরের এমন কাণ্ডে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। সমালোচনায় সরব হয়েছেন অনেকেই।
শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের কালনা শহরের ধর্মডাঙায়। আক্রান্ত মহিলা কনস্টেবল চন্দনা মণ্ডল (২৮) মাথা ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত নিয়ে কালনা মহকুমা হাসপাতালে ভরতি। পরে তিনি কালনা পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের গোকুলচন্দ্র বাইনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) সৈকত ঘোষ বলেন, “এই বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার তদন্ত চলছে।” তবে এদিন রাত পর্যন্ত তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। অভিযুক্ত কাউন্সিলর অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাঁর দাবি, মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। তিনি কাউকেই মারধর করেননি। কালনার পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, “এই বিষয়ে আমার কাছে কোনও অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।”
চন্দনাদেবী জানান, এদিন সকালে সাইকেল নিয়ে থানায় ডিউটি করতে যাচ্ছিলেন। সেই সময় ধর্মডাঙায় ইট-বালির একটি ডিপোর সামনে রাস্তা আটকে লরি দাঁড়িয়েছিল। তিনি তখন ওই ডিপোর মালিক তথা স্থানীয় কাউন্সিলর গোকুলবাবুকে গিয়ে জানান, ভোরের দিকে এই বালি-ইট নামানোর কাজ করলে সাধারণ মানুষের যাতায়াতের সমস্যা হয় না। চন্দনাদেবীর অভিযোগ, এই কথা বলাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন কাউন্সিলর। তাঁকে সাইকেল থেকে টেনে নামিয়ে টানতে টানতে একটি ঘরে নিয়ে যান। তার পর তাঁকে ব্যাপক মারধর করা হয়। মারের চোটে জ্ঞান হারান তিনি। তখন কয়েকজন স্থানীয় মহিলা এসে তাঁকে উদ্ধার করে। খবর পেয়ে পরিজনরা এসে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। পুলিশে অভিযোগ জানান তিনি। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলেও যায়। চন্দনাদেবী বলেন, “আন্তর্জাতিক নারী দিবসে কত অনুষ্ঠান হচ্ছে। কত কথা বলা হচ্ছে। আর সেই দিনই এক কাউন্সিলর এইভাবে একজন মহিলার উপর হামলা করতে পারেন তা কল্পনাও করতে পারছি না।”
ছবি: মোহন সাহা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.