সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: লোকসভা ভোটের পর জনরোষের ভয়ে দীর্ঘদিন এলাকাছাড়া ছিলেন। শেষপর্যন্ত এলাকায় ফিরলেও কাউন্সিলরকে কার্যত বয়কট করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারাই। এমনকী, জনপ্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। দলের কাউন্সিলরের মনোবল ফেরাতে তাঁর বাড়ির সামনেই অন্য কাউন্সিলরদের ধরনায় বসার নির্দেশ দিল তৃণমূল কংগ্রেস।
ঘটনার সূত্রপাত্র লোকসভা ভোটের সময়। বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে যেদিন ভোট ছিল, সেদিন স্থানীয় একটি সিপিএম এজেন্টকে মারধর ও বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা উত্তেজনা ছড়িয়েছিল দুর্গাপুরের আশিসনগরে। ঘটনার পর রীতিমতো জনরোষের শিকার হন এলাকায় তৃণমূল কাউন্সিলর শশাঙ্কশেখর মণ্ডল ও তাঁর পরিবারের লোকেরা। তৃণমূল পার্টি অফিস ও কাউন্সিলের বাড়িতে চলে ভাঙচুর। আতঙ্কে সপরিবারে এলাকায় ছাড়েন দুর্গাপুর পুরনিগমের ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর। দলের নেতৃত্ব, পুলিশের আশ্বাসেও এলাকায় ফিরতে রাজি হননি তিনি। শেষপর্যন্ত গত ১৯ মে পুলিশি নিরাপত্তায় বৃদ্ধা মা-কে সঙ্গে নিয়ে দুর্গাপুরের আশিসনগরের বাড়িতে ফেরেন কাউন্সিলর শশাঙ্কশেখর মণ্ডল। তাঁর দাদা ও পরিবারের অন্য সদস্যরা এখনও এলাকাছাড়া।
স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বের অভিযোগ, এলাকায় ফিরলেও কাউন্সিলরকে কার্যত বয়কট করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘরবন্দি হয়ে থাকতে হচ্ছে শশাঙ্কশেখর মণ্ডলকে। এমনকী, কাউন্সিলরের কাছে বিভিন্ন প্রয়োজন যাঁরা আসছেন, তাঁদেরকেও গ্রামবাসীরা হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। কাউন্সিলর শশাঙ্কশেখর মণ্ডলের মনোবল ফেরাতে অভিনব কৌশল নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস পশ্চিম বর্ধমান জেলা নেতৃত্ব। দলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি নির্দেশ, কাউন্সিলর শশাঙ্কশেখর মণ্ডলের বাড়ির সামনে ধরনায় বসতে হবে দুর্গাপুর পুরনিগমে অন্য তৃণমূল কাউন্সিলরদের। মঙ্গলবার থেকে এই কর্মসূচি শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে। এদিকে আবার দলের কর্মসূচিতে যোগ দেওয়া নিয়ে তৃণমূল কাউন্সিলরদের একাংশই দ্বিধাগ্রস্থ বলে শোনা যায়। তৃণমূলের অন্দরের খবর, শশাঙ্কশেখর মণ্ডলের বিরুদ্ধে যেহেতু সাধারণ মানুষের ক্ষোভ আছে, তাই তাঁর বাড়ির সামনে ধরনায় বসলে ভুল বার্তা যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে শাসকদলের কাউন্সিলরদের একাংশই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.