ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: প্রায় দেড়মাস ধরে জ্বলছে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি (Sandeshkhali)। সেখানকার তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে জমি দখল-সহ একাধিক আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে সরব স্থানীয় মহিলারা। প্রায় নিত্যদিন সন্দেশখালির কোথাও না কোথাও ক্ষোভ-বিক্ষোভ চলছেই। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে উত্তেজনা প্রশমনে তৎপর পুলিশও। শাসকদলের নির্দেশে সন্দেশখালি শান্ত করতে দুই মন্ত্রী সেখানে নাগাড়ে জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত, ঘনঘন অশান্ত এলাকায় রাজনৈতিক নেতাদের যাতায়াতকে ‘উসকানি’ হিসেবে দেখবে বিরোধীরা। সন্দেশখালির বাসিন্দাদের পাশে থাকতে আগামী ৩ মার্চ সেখানে তৃণমূলের (TMC) সভা করার কথা ছিল তৃণমূলের। কিন্তু অভিষেকের এই সাবধানবাণীর পর সেই কর্মসূচিতে সামান্য বদল করা হয়েছে বলে খবর। উত্তপ্ত এলাকায় নয়, বরং সন্দেশখালি সংলগ্ন ধামাখালিতে (Dhamakhali) কর্মিসভা করা হবে তৃণমূলের তরফে। মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক, সুজিত বসু ছাড়াও সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতো-সহ এলাকার একাধিক নেতা থাকতে পারেন এই সভায়।
রবিবার বজবজে জলপ্রকল্পের উদ্বোধনে গিয়ে সন্দেশখালি ইস্যু নিয়ে অনেক কিছুই বলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। এই মুহূর্তে অভিযোগের একেবারে কেন্দ্রে থাকা তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানকে (Shahjahan Sheikh) এখনও পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা যায়নি, তার দায় তিনি চাপিয়েছেন আদালতের উপর। হাই কোর্টের স্থগিতাদেশের জেরে রাজ্য পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারছে না বলে মত তাঁর। অভিষেকের এই বক্তব্যের পর সাংবাদিকরা তাঁর কাছে জানতে চান, কবে সন্দেশখালি যাবেন? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের জবাব, ”ঠিক হলে যাব। দেখুন এই মুহূর্তে সন্দেশখালির যা পরিস্থিতি, সেখানে ঘনঘন রাজনৈতিক নেতাদের যাতায়াত উসকানি হিসেবে দেখা হবে। তাছাড়া পুলিশ সেখানে অনবরত কাজ করছে। তাঁরাই সেখানকার পরিস্থিতি সবচেয়ে ভালো বুঝবেন।” তাহলে ৩ তারিখ তৃণমূলের জনসভা কি হবে না? তাতে অভিষেক গোটা বিষয়টি স্থানীয় নেতৃত্বের উপরই ছেড়ে দেন। বলেন, “আপনারা পরে সভা করবেন। পরিস্থিতি ঠিক হলে আমি যখন যাওয়ার প্রয়োজন মনে করব, যাব। অযথা গিয়ে পরিস্থিতি অস্বাভাবিক করতে চাই না।”
তৃণমূল সূত্রে খবর, অভিষেক এভাবে বারণ করার পরই সিদ্ধান্ত বদল করেছেন পার্থ, সুজিতরা। সন্দেশখালির সভা বাতিল করে ধামাখালিতে দলের কর্মিসভা হবে আগামী ৩ মার্চ। জমি দখল সংক্রান্ত যে সব অভিযোগ ইতিমধ্যে জমা পড়েছে, এলাকায় সহায়তা ক্যাম্প করে তার অধিকাংশের সমাধান করা হয়েছে। রবিবারই এনিয়ে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে তৃণমূল। অর্থাৎ সন্দেশখালিবাসীর পাশে যে শাসকদল এবং প্রশাসন সদাসর্বদা রয়েছে, তাঁদের স্বার্থেই কাজ হচ্ছে, সেটাই যেন বারবার বোঝাতে চাইছে তৃণমূল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.