চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল : শহরে ঢুকতেই মন খুশ আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী তথা অভিনেত্রী মুনমুন সেনের। তাঁর কথায়, “আগে জানতাম, আসানসোল মানে শুধু কয়লা-খনির শহর। কিন্তু এই শহর সুন্দর, এত সুন্দর এখানকার মানুষের ভালোবাসা। এসব দেখে আমি মুগ্ধ। আমি সিপিএম বুঝি না, কংগ্রেস বুঝি না, বিজেপি বুঝি না। সবাইকে আপন করে, আদর করে কাছে টেনে নিন। কারও সঙ্গে ঝগড়া করতে আসিনি আমরা। আমরা শুধু কাজ করতে এসেছি। উন্নয়ন করতে এসেছি। ” সোমবার আসানসোলের রবীন্দ্রভবনে কর্মিসভায় এই বার্তাই দিলেন তৃণমূলের তারকাপ্রার্থী মুনমুন সেন। সভা শেষে রূপনারায়ণপুরে আরও একটি সভা করেন তিনি।
সোমবার আাসানসোলের রবীন্দ্রভবনে একটি কর্মিসভার আয়োজন করে তৃণমূল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন সেন সহ তৃণমূলের জেলা সভাপতি ভি শিবাদন, আসানসোলের পাঁচ বিধায়ক, মেয়র পারিষদ ও কাউন্সিলররা। মূলত আসানসোল উত্তর ও দক্ষিণের তৃণমূল কর্মীরা ছিলেন এই সভায়। এদিনের কর্মিসভায় জনসংযোগের মাধ্যম হিসেবে দোল উৎসবের আয়োজনের বিষয়ে আলোচনা করা হয়। মেয়র তথা বিধায়ক জিতেন্দ্র তেওয়ারি তাঁর বক্তব্যে লড়াইয়ের ময়দানে দোল ও হোলির মতো উৎসবকে হাতিয়ার করার প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, ” সাধারণ মানুষ, দলছুট কর্মীদের হোলির দিন রং মাখিয়ে আপন করে নিন। ভুল বোঝাবুঝি দূর করে সক্রিয় ভূমিকায় নিয়ে আসুন তাঁদের। নিয়ে আসুন নির্বাচনী ময়দানে।” এর পাশাপাশি তিনি বলেন, “ভুলে যাবেন না আমাদের ভুলে গতবারের তৃণমূল প্রার্থী হেরে গিয়েছিলেন আসানসোলে। সেই ভুল সংশোধন করার সময় এসেছে। ভুল শুধরে মুনমুন সেনকে জয়ী করতেই হবে।” এবিষয়ে কুলটির বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “গতবারে কুলটি থেকে চল্লিশ হাজার ভোটে হেরে গিয়েছিল তৃণমূল। আমরা চোরাস্রোত বুঝতে পারিনি। তবে অঘটন একবারই ঘটে। এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি আর হবে না।” কুলটির মানুষ এবার মুনমুন সেনকে নিরাশ হতে দেবে না বলে আশ্বাস দেন তিনি। আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া ভাষায় দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “যাঁরা পার্টি অফিসে অযথা বসে থাকেন কিন্তু দলের কোনও কাজে লাগেন না। তাঁরা যদি সতর্ক না হন তবে ওই কার্যালয়ও থাকবে না, আপনিও থাকবেন না।”
কর্মীদের উদ্দেশ্যে মুনমুন সেন বলেন, ‘‘অভিজ্ঞতা ও বয়সের হেরফেরে কেউ মঞ্চে বসে আছেন, আবার কেউ নিচের দর্শক আসনে। আমরা সবাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক। কেউ নেতা নই, সবাই কর্মী। আমিও তৃণমূলের কর্মী। আমার ভোট প্রচারে আমার দুই মেয়ে আসবে তাঁরা কিন্তু সূচিত্রা সেনের নাতনি বা মুনমুন-কন্যা বলে শুধু প্রচারে আসবেন না। তাঁরা তৃণমূল কর্মী হয়ে প্রচার ময়দানে নামবেন। আমাদের মাথার ওপর দিদি রয়েছেন, তিনি আমাদের মাতৃসম। তাঁর উন্নয়নের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে এক হয়ে ভেদাভেদ ভুলে ময়দানে নামতে হবে।’’ অর্থাৎ, আসানসোলে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ঘোচাতে একযোগে সবাইকে এক করার বার্তা দিয়েছেন তৃণমূল তারকা প্রার্থী মুনমুন সেন। সেই সঙ্গে জয়ের বিষয়ে দলের কর্মীদের আশ্বাস দেন তিনি। তবে তাঁর প্রচার ঠিক কতটা কার্যকরী হল, তা বোঝা যাবে ফলাফলের পরেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.