চন্দ্রশেখ চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: মায়ের মেয়ে তিনি৷ আজীবন মহানায়িকা-কন্যার পরিচয়টা তাঁর চিরকালীন৷ ঠিক মায়ের মতোই৷ সিনেমার পর্দা ছেড়ে এখন রাজনৈতিক জীবনে পা রেখেছেন মুনমুন সেন৷ এবারের লোকসভায় তিনি আসানসোল কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী৷ লাগাতার প্রচারে তিনি আসানসোলে প্রচার করছেন৷শনিবার সেখানেই মা সুচিত্রা সেনের ছবি হাতে নিয়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়লেন মুনমুন।
কুলটির মিঠানিতে তৃণমূল কর্মীরা ফুল, মালা দিয়ে তাঁকে অভিবাদন জানান। পাশাপাশি, তাঁর হাতে তুলে দেন মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের ছবি। মায়ের ছবি হাতে নিয়ে কয়েক মূহূর্তের জন্য আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন সুচিত্রা-কন্যা। তারপরই ঘোর কাটিয়ে ছবিতে চুম্বন করেন তিনি। এই ধরনের একটি ছবি উপহার পাওয়ার পর মিঠানির সব তৃণমূল কর্মীকে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি মুনমুন সেনেরও দুটি ছবি তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়। যার মধ্যে একটি ছবি ২৭ বছর আগের। মুনমুন সেন যখন এই গ্রামে প্রথমবার অনুষ্ঠান করতে এসেছিলেন, সেই সময়ের ছবি। গ্রামবাসীরা জানান, তাঁদের কাছে সযত্নে রাখা ছিল ছবিটি। সেই স্মৃতি রোমন্থন করানোর জন্য ছবিটি তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়।শনিবার কুলটির মিঠানি গ্রামে সংহতি ভবনে কর্মী সম্মেলন করতে আসেন মুনমুন সেন। এদিন ধামসা মাদল বাজিয়ে তাঁকে স্বাগত জানানো হয়। বাজানো হয় ঢাক ও তাসা। বেলা দুটোর পর মন্ত্রী মলয় ঘটক, জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন ও কুলটির বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে মঞ্চে উঠেন। এদিনের কর্মিসভার ভিড় বদলে যায় জনসমাগমে। সংহতি ভবন উপচে পড়ে মানুষের ভিড়ে। ভবনের বাইরে তিনগুন লোক দাঁড়িযে পড়া রাস্তার ওপর। চারটে এলইডি স্ক্রিন দেওয়ায় বাইরে দাঁড়িয়ে সবাই তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন সেনের বক্তব্য শোনেন।
মুনমুন সেন সবার শেষে বক্তব্য দিতে উঠে সবাইকে মিলে মিশে কাজ করার বার্তা দেন। দলের কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন,‘কেউ মার খেয়ো না, কাউকে মারধরও কোরো না। বুথে বুথে ঠিক করে ভোট করতে সাহায্য করো। বিশেষ করে বয়স্ক ভোটারদের পাশে দাঁড়াও৷’ এরপর মহিলাদের সমাগম থেকে আপ্লুত হয়ে ওঠেন৷ বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মহিলাদের সবসময় এগিয়ে আসার কথা বলেন। আপনারা এই রোদে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন আমাদের জন্য। দেখে খুব ভালো লাগছে। আমাদের দিদি আজ লড়াকু বলে শুধু রাজ্য নয়, দেশ নয়, তিনি এখন ন্যাশনাল ফিগার। তাঁর কন্যাশ্রী প্রকল্প বিশ্বসমাদৃত।’ প্রতিপক্ষ বিদায়ী সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়র নাম করেই প্রার্থী বলেন,‘এখানে অনেক উন্নয়নের কাজ করার ছিল, তা হয়নি। এখনও রাস্তার অবস্থা এই এলাকায় ভালো নয়। এখানে কারখানা বেশ কিছু বন্ধ হয়ে গেছে। সংসদে সেই আওয়াজ তুলতে হবে। সেই কারখানার খোলার ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে হবে। মানুষকে কাজ দিতে হবে। একজন সাংসদ হিসাবে কিছু কাজ করা বাকি আছে, সেই কাজ আমি করে যেতে চাই।’
গত লোকসভা ভোটে কুলটি থেকে তৃণমূল প্রার্থী দোলা সেন ৪০ হাজার ভোট পিছিয়ে পড়েছিলেন। শেষপর্যন্ত জিতে যান বিজেপি প্রার্থী৷ এবার আর তার পুনরাবৃত্তি হবে না, জানিয়েছেন আত্মবিশ্বাসী প্রার্থী৷ এদিন বার্নপুরে গুরুদোয়ারার অনুষ্ঠানেও যোগ দিয়েছেন মুনমুন সেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.