চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: “ভোটের দিন ভুল ফুলে ভোট দিও না। ইভিএমে জোড়া ফুল চিহ্নের বোতাম চিপে ভোট দিও। কর্মীদের বলছি, মা বোনেদের ভাল করে বুঝিয়ে দিও কোন ফুলটা কোন পার্টির।” বারাবনির পাঁচগাছিয়াতে এভাবেই সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে গেলে তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন সেন।
রবিবার স্বমেজাজে ধরা দিলেন অভিনেত্রী। সাদা শাড়িতে ভোট প্রচারের পাশাপাশি সাঁওতাল মহিলাদের হাত ধরে কোমরও দোলালেন তিনি। এদিন প্রচারে বেরিয়ে মুনমুন সেন বলেন, “মহিলারা ভোটের দিন সকাল সকাল এসে নিজের ভোট নিজে দেবেন। স্বামীদেরও টেনে নিয়ে আসবেন বুথে। ছেলেদের বলছি ঝগড়া করো না। যাঁরা অন্য দলে আছে তাঁদের বুঝিয়ে নিয়ে এসো। অনেকেই তো চলে এসেছে। একদিন দেখবে তাঁরাও চলে আসবে। আমাকে ভোট দেওয়া মানে দিদিকে ভোট দেওয়া। আসানসোল লোকসভাতে দিদিকে একটা সুযোগ দিও। বাঁকুড়াতে দিদি নিজে অনেক কাজ করেছেন। আমাকে দিয়েও করিয়েছেন। আমি সেই কাজ এখানেও করতে চাই।”
বারাবনি ও জামুড়িয়ার পঞ্চায়েত এলাকায় ছোট ছোট সভা করে রবিবাসরীয় প্রচারে ঝড় তুললেন মুনমুন সেন। পাঁচগাছিয়ায় খোলা জায়গায় অনুষ্ঠানও করেন। চড়া রোদকে উপেক্ষা করে বহু আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা থেকে মহিলারা সভায় হাজির হয়েছিলেন। ধামসা মাদল বাজিয়ে মুনমুন সেনকে অভিবাদন জানান তাঁরা। এমনকী মঞ্চে উঠে মুনমুন সেনের হাত ধরে নাচও করেন। বারাবনির প্রাক্তন ও প্রয়াত বিধায়ক মানিক উপাধ্যায়ের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে অনুষ্ঠান শুরু হয়। মুনমুন সেনের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়, জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন, ব্লক সভাপতি অসিত সিং-সহ অন্যরা।
এদিন বারাবনির পাঁচগাছিয়া, আসনবনি, জামুড়িয়ার চুরুলিয়া ও মদনতোড় অঞ্চলে সভা করেন। মুনমুন সেন প্রথম দফায় প্রচারে এসে পুরনিগম এলাকায় বড় প্রচার সভা করেছিলেন। এবার তিনি গ্রামীণ ও পঞ্চায়েত এলাকায় ছোট ছোট সভা করছেন। আগের থেকে বেশি সভা করছেন। রাজনৈতিক মহলের মতে, প্রথম দফায় তিনি যেভাবে বক্তব্য রাখছিলেন তার থেকে এখন অনেক বেশি সতর্ক। প্রতিপক্ষকে কোনওরকম ব্যক্তিগত আক্রমণ করেননি অভিনেত্রী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারমুখি কাজগুলিকে তুলে ধরেন এদিন।
তিনি বলেন, “একজন সাংসদ বছরে পাঁচ কোটি টাকা পায় ধাপে ধাপে। সেই টাকা প্রত্যেকটি বিধানসভা এলাকাতে ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয়। যদি আমি আবার সাংসদ হই তোমাদের ছোট ছোট দাবিগুলি পূরণ করতে পারব। কোথাও শ্মশান কোথাও স্কুলের বাউন্ডারি কোথাও পানীয় জলের ব্যবস্থা যেখানে যা সম্ভব তা করব। সেরকম কাজ গত পাঁচ বছরে লোকসভায় হয়েছিল বলে মনে হচ্ছে না।” সঙ্গে জুড়ে দেন, “স্বাধীনতার পর থেকে কেউ সেভাবে মানুষের জন্য করেনি। সবাই বলেছে চাকরি দেব কিন্তু দেওয়া যায়নি। সিপিএম করেনি, গত পাঁচ বছরে বিজেপিও করেনি। একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রচুর কাজ করেছেন। এখনও করে চলেছেন। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটা চান্স দিও। মনে রেখো দিদির জন্য একটা ভোট শুধু চাইতে এসেছি।”
ছবি: মৈনাক মুখোপাধ্যায়
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.