পলাশ পাত্র, তেহট্ট: বিজেপি-কংগ্রেস এখনও প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে উঠতে পারেনি। সিপিএম করলেও প্রচারে কয়েক যোজন পিছিয়ে রয়েছে৷ এমতো অবস্থায় এগিয়ে থেকেও কর্মীদের নিয়ে ভোটযুদ্ধে ঝাঁপাতে চাইছেন আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে কৃষ্ণনগর থেকে তৃণমূলের প্রার্থী মহুয়া মৈত্র।
[প্রচারেও ‘লাগল যে দোল’, আবিরে রাঙা হয়ে ভোট চাইলেন প্রার্থীরা ]
তৃণমূল শাসকদল হওয়ায় বুথওয়াড়ি সংগঠন ভাল মতো তৈরি। নিচুস্তরের বুথভিত্তিক সেই সংগঠনকে আরও একত্রীকরণ করার কাজ শুরু করেছেন এই দাপুটে তৃণমূল নেত্রী। তাঁর কথায়, ‘কর্মীরাই সম্পদ৷ তাঁদের নিয়েই ভোট পরিচালনা করব৷’’ প্রার্থীর কাছে এমন সম্মান পেয়ে খুশি কর্মীরাও। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে করিমপুর কেন্দ্রের প্রার্থী হয়ে, একই ভাবে বুথওয়াড়ি সংগঠন তৈরিতে জোর দিয়েছিলেন মহুয়া মৈত্র। বিপুল ভোটে জয়লাভ করে প্রথম ওই এলাকা থেকে মহিলা বিধায়ক হন তিনি। একই কায়দায় লোকসভা ভোট করতে দিল্লি থেকে অফিস সামলানোর জন্য লোকও নিয়ে এসেছেন মহুয়া। তৈরি করে ফেলেছেন ‘ওয়ার রুম’। যেখানে সমস্ত বুথ কমিটির তালিকা, ফোন নম্বর ইত্যাদি মজুত করার কাজ চলছে। মহুয়া এক একটা অঞ্চলে গিয়ে বুথ সভাপতি ও কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছেন৷ মজবুত সংগঠন করে ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হচ্ছেন করিমপুরের বিধায়ক। সেক্ষেত্রে আবেগ বা নেতা হিসেবে কে কত বড় নাম, তা গুরুত্ব পাচ্ছে না।
[ঘাটালে প্রচারে দেব, মালদহে বসন্তোৎসবে মাতলেন মৌসম]
এমন দাপুটে নেত্রীকে পেয়ে কর্মীরাও আপ্লুত। সূত্রের খবর, বিজেপির এগিয়ে থাকা এলাকাগুলিকে মূলত টার্গেট করছেন মহুয়া। কিন্তু মুখে বলছেন, ‘‘আমি জিতব জানি। দুই-তিন-চার কে হবে, তা ওনারা বলতে পারবেন।’’ রাজনৈতিক ভাবে সচেতন মহুয়া জানেন এই কেন্দ্র থেকে পরপর দু’বার সাংসদ হয়েছেন অভিনেতা তাপস পাল৷ বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছেন তিনি। স্বাভাবিক ভাবেই মানুষের প্রত্যাশা রয়েছে তাঁর উপরেও। উচ্চশিক্ষিত এই নেত্রী সংগঠনকে বরাবর গুরুত্ব দেন। তাই নাকাশিপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের ছটি এবং কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রের পাঁচটি পঞ্চায়েতে পায়ে হেঁটে সরাসরি ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এই এগারোটি কেন্দ্রেই পঞ্চায়েত নির্বাচনে এগিয়ে ছিল বিজেপি৷
[হোয়াটসঅ্যাপে নুসরত জাহানের অশ্লীল ছবি শেয়ার, গ্রেপ্তার ১ যুবক]
পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপির ভাল ফল হওয়া নাকাশিপাড়া ব্লকের বেথুয়াডহরি ১ ও ২, নাকাশিপাড়া, পাটিকাবাড়ি, বিল্বগ্রাম-সহ ছ’টি পঞ্চায়েতে পায়ে হেঁটে প্রচার করেছেন তিনি। একইসঙ্গে কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের ভান্ডারখোলা, ভীমপুর, আসাননগর, পোড়াগাছা-সহ পাঁচটি বিজেপির প্রভাব থাকা পঞ্চায়েত এলাকাতেও হেঁটে প্রচার করছেন সংগঠন বোঝা এই নেত্রী। জানা গিয়েছে, আগামী চার-পাঁচ দিনের মধ্যে মহুয়া মৈত্র কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের সবকটি বিধাসভায় কর্মিসভা করে ফেলতে চাইছেন। ব্লক সভাপতিদের সঙ্গে বৈঠকও করে ফেলেছেন তিনি। এমনকী, অভিমান করে বসে থাকা কর্মীদের সঙ্গেও কথা বলেছেন। পায়ে স্নিকার, চোখে সানগ্লাস, রোদ থেকে বাঁচতে মাথায় মুড়ে দেওয়া শাড়িতে মহুয়াকে দেখতে পথে ভিড় জমাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। কর্মীরা বলছেন, ‘‘দিদি এত জোরে হাঁটেন যে, পারা যায় না। আমরা খুশি। অন্য ধরনের এক নেত্রীকে আমরা পেয়েছি।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.