ছবি: প্রতীকী
নন্দন দত্ত, সিউড়ি: ভরদুপুরে দুষ্কৃতীদের ছোঁড়া বোমায় খুন হলেন এক তৃণমূল কর্মী। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার দুপুরে রামপুরহাট থানার জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের কাছে। মৃত তৃণমূল কর্মীর নাম মোশারফ হোসেন ওরফে বাবুল খান (৫০)। বাড়ি একই থানার দখলবাটি গ্রামে।
বাবুলের পরিবার এলাকায় কংগ্রেসি পরিবার বলে চিহ্নিত ছিল। তাঁর বাবা হানিফ খান দখলবাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেসের পঞ্চায়েত প্রধান ছিলেন। পরে তারা তৃণমূলে যোগদান করেন। এনিয়ে দলে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। ফলে খুনের পিছনে বিপক্ষ গোষ্ঠী গ্রামের বাসিন্দা কামা শেখের হাত রয়েছে বলে পরিবারের দাবি। গ্রাম সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৯ সালে কামার ভাই খুন হয়। তার পরের বছর খুন হয় কামার কাকার ছেলে। দুটি খুনের পিছনেই বাবুলের নাম জড়িয়েছিল।
এছাড়া ২০০২ সালে ওই গ্রামে বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছিল। সেই ঘটনাতেও বাবুলের যোগ পেয়েছিল পুলিশ। বেশ কিছু বিষয় নিয়েই বাবুলের সঙ্গে গ্রামে অশান্তি চলছিল। সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির দ্বন্দ্ব বাধে। সে সময় কামা বিজেপির পক্ষ নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। ঝামেলা মেটাতে মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করেন বাবুল। সেই থেকে তাদের মধ্যে আক্রোশ আরও বাড়ে।
বাবুলের ভাই আশরাফ খান বলেন, “ইদের সময় দাদাকে মারার চক্রান্ত করেছিল। কিন্তু দাদা সতর্ক হয়ে যাওয়ায় সে যাত্রা কিছু করতে পারেনি”। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামের এক বাসিন্দা জানান, পঞ্চায়েতের টাকা পয়সা নিয়েও একটি গন্ডগোল চলছিল। শনিবার সকালে রামপুরহাট থেকে বাড়ি ফিরছিল বাবুল। সে সময় তাকে বোমা ছোঁড়া হয়। দুটি বোমা মাথায় লাগে। মাথার ঘিলু বেরিয়ে যায়।
তৃণমূলের ব্লক সভাপতি আনারুল হোসেন বলেন, “বাবুল আমাদের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। সকালে বাজার করে মোটরবাইক নিয়ে দুনিগ্রাম রোড হয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। সে সময় দুষ্কৃতীরা তাঁকে বোমা মারে। ওদের পরিবার যার নাম করছে সেই কামাও আমাদের দলের কর্মী। তবে লোকসভা নির্বাচনের সময় বিজেপির সঙ্গে একটা ঝামেলা হয়। সেই ঝামেলার মধ্যস্থ করেছিল বাবুল। যার জন্য বিজেপির কয়েকজন জেলে রয়েছে। আমরা পুলিশকে সব দিক তদন্ত করে দেখতে বলেছি।”
বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল বলেন, “আমাদের ছ’জন কর্মীকে খুন হয়েছে। এই খুনের বিরুদ্ধেই আমাদের লড়াই। ওরা নিজেদের মধ্যে টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে খুনোখুনি করে মরছে। আমরা খুনের রাজনীতিতে বিশ্বাসী নই।” জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং বলেন, “খুনের কারণ এখনও জানা যায়নি। তদন্ত চলছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.