রাজা দাস, বালুরঘাট: এলাকার মানুষের ভোট বয়কটের সিদ্ধান্তকে সমর্থন। একযোগে মনোনয়ন প্রত্যাহার সব রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের। রাস্তার দাবিতে প্রথম থেকেই ভোট বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল অমৃতখন্ড গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত তিনটি গ্রামের মানুষ। দিন কয়েক আগে তিনটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থী মনোনয়ন জমা হলেও, ভোট বয়কটের সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন গ্রামবাসীরা। অবশেষে এলাকার দাবিকে স্বাগত জানিয়ে তৃণমূল, বাম এবং বিজেপির প্রার্থীরাও তাঁদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিলেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনেকটাই চাপের মুখে প্রশাসন।
[ যে জিতবে সেই প্রধান, বেতাইয়ে তৃণমূলকে হারাতে সিপিএমের ঘরে ফুটল পদ্মফুল ]
বালুরঘাট ব্লকের অমৃতখন্ড গ্রাম পঞ্চায়েতের চকমাধব সংসদের অধীনে রয়েছেন চকমাধব, কুতুবপুর ও চিংরা গ্রাম। ভোটের ঘণ্টা বাজতে না বাজতেই গ্রামের দেওয়ালে দেওয়ালে লেখা ‘রাস্তা নাই ভোট নাই’-এর মতো স্লোগান। কেননা গ্রামগুলি থেকে যোগাযোগের একমাত্র রাস্তাটি পাকা করার দাবি ছিল গ্রামবাসীদের। সেখানকার দুই কিলোমিটার মাটির রাস্তায় কিছুটা ইট সোলিং থাকলেও বাকিটা কাঁচা। কোথাও কোথাও হাঁটু সমান গর্ত। বর্ষায় ব্যাপক সমস্যায় পড়েন এলাকার মানুষ। পাকা রাস্তার দাবিতে বিভিন্ন সময় স্থানীয় পঞ্চায়েত ও প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন গ্রামবাসীরা। তবে আশ্বাস ছাড়া কিছুই মেলেনি বলেই দাবী। তাই এবার প্রথম থেকে ভোটকেই হাতিয়ার করেছে গ্রামবাসীরা। প্রথম থেকেই গ্রামবাসীদের ভোট বয়কটের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে স্থানীয় সব রাজনৈতিক নেতৃত্ব। পরে নিজেদের অবস্থান থেকে আগেভাগে সরে পড়ে বামেরা। তারা আচমকা ওই সংসদের হয়ে প্রার্থী মনোনয়ন জমা করে ফেলে। অবশ্য বিশ্বাসভঙ্গের খেসারত দিতে হয়েছে প্রায় সঙ্গেসঙ্গেই। কেননা গ্রামবাসীদের রোষে ওইদিনই ভাঙচুর হয়েছে বামেদের স্থানীয় কার্যালয়টি। পরে অবশ্য ওই সংসদের প্রার্থী পদে মনোনয়ন জমা করা হয় তৃণমূল ও বিজেপির পক্ষ থেকেও। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃত্বদের অবস্থান বদলালেও ভোট বয়কটে অনড় ছিলেন গ্রামের ভোটাররা। কিন্তু এরপরেই তৃণমূল প্রার্থী পম্পা মাহাতো, বিজেপির মনিকা মুর্মু এবং বামদল আরএসপি প্রার্থী ফুলতি মার্ডি তাঁদের দাখিল করা মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন।
[ ছড়া কেটে প্রচার, দেওয়াল লিখনে কাঁকসায় তৃণমূলের ভরসা শিক্ষক নিরুপম ]
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বিজেপি সভাপতি শুভেন্দু সরকার জানান, এলাকার মানুষের দাবি পূরণে ব্যর্থ ক্ষমতাসীন তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত। এলাকার উন্নয়নে গ্রামবাসীদের দাবি সঙ্গত। প্রশাসনকে চাপে রাখতেই তাঁদের ভোট বয়কটের সিদ্ধান্ত। সেখানকার মানুষের দাবির সমর্থনে প্রার্থী প্রত্যাহার করেছে বিজেপি। আরএসপি জেলা সম্পাদক বিশ্বনাথ চৌধুরী জানান, তাঁদের প্রার্থীও ওই এলাকার বাসিন্দা। স্থানীয় মানুষের দাবির সমর্থনে তাঁদের প্রার্থী প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যকারী সভাপতি বিপ্লব খাঁ বলেন, সেখানকার রাজনৈতিক সমস্ত প্রতিনিধিদের সঙ্গে এলাকার মানুষজন আলোচনা করেছে। এলাকার মানুষের আবেগের কথা মাথায় রেখেই অনান্যদের মতো তাঁদের প্রার্থীও মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.