সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: দিনেদুপুরে শুটআউট দুর্গাপুরে। চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ল ইস্পাতনগরীর এ জোনে, মোহন কুমারমঙ্গলম পার্কে। এক বিজেপি কর্মীকে লক্ষ্য করে গুলি চলে বলে অভিযোগ। প্রাণ বাঁচাতে তিনি পার্কের মধ্যে একটি রেস্তরাঁয় লুকিয়ে পড়েন। ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে যায় দুর্গাপুর থানার পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে গুলির খোল। তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
ঘটনার সূত্রপাত পার্কের এক অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে। রবিবার এই পার্কটিতে তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে একটি অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল, যেখানে নেতা-মন্ত্রীরাও হাজির থাকতেন। তার প্রস্তুতি হিসেবে শনিবার দুপুর নাগাদ পার্কে প্যান্ডেল বাঁধতে যান ডেকরেটরসের কর্মীরা। অভিযোগ, সেসময় তাঁদের বাধা দেন লিজ নেওয়া পার্কের ওই রেস্তরাঁর মালিক দেবাশিস রায়, যিনি এলাকায় সক্রিয় বিজেপি কর্মী বলে পরিচিত। তাঁর অভিযোগ, “আমার অনুমতি ছাড়াই এই পার্কে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আমি আপত্তি করেছিলাম। বলেছিলাম, এত ছোট পার্কে কীভাবে নেতা-মন্ত্রীদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠান সম্ভব? কিন্তু কেউ আমার কথা কানে তোলেনি।”
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এদিন দেবাশিসবাবু কাজে বাধা দিলে, অন্তত ৬০-৭০ জনকে নিয়ে পার্কে চড়াও হন স্থানীয় তৃণমূল নেতা, দুর্গাপুরের ১০ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রাজীব ঘোষ। এই সময়ে দেবাশিসবাবুর সহযোগী, আরেক বিজেপি কর্মী অতুল বাগদিকে লক্ষ্য করে তিন রাউন্ড গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। তিনি প্রাণ বাঁচাতে বন্ধু দেবাশিসের রেস্তরাঁয় ঢুকে পড়েন। আরও অভিযোগ, সেখানে ঢুকেই ভাঙচুর করে রাজীব ঘোষের অনুগামীরা। কার্যত তছনছ হয়ে যায় রেস্তরাঁটি। এই ঘটনার পর লিজ নেওয়া পার্কের মালিক দেবাশিস রায় অভিযোগের সুরে বলেন, “আমি বিজেপি কর্মী বলে ইচ্ছাকৃতভাবে আমার এই রেস্তরাঁ, পার্কের উপর হামলা চলেছে। আমার বন্ধু অতুল বাগদিকেও তাই মারধর করা হয়েছে।” অন্যদিকে, স্থানীয় কাউন্সিলর রাজীব ঘোষের পালটা অভিযোগ, “দেবাশিসবাবু এই পার্কের লিজ নেওয়ার পর থেকেই এর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে। রাতে এখানে নানা অসামাজিক কাজকর্ম হয়। এনিয়ে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ ছিলেন। আজ তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।” তবে পার্কে ঢুকে দিনেদুপুরে গুলিচালনার ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকাবাসী। দুর্গাপুর থানার পুলিশ তদন্তে নেমেছে।
ছবি: উদয়ন গুহরায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.