সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: নির্বাচন মিটে গিয়েছে৷ ফলাফলও ঘোষণা হয়ে গিয়েছে৷ কিন্তু এখনও নির্বাচন পরবর্তী হিংসা অব্যাহত এরাজ্যের সর্বত্র৷ বিশেষ করে যে লোকসভা আসনগুলিতে জয় পেয়েছে বিজেপি, সেখানেই শাসকদলের কর্মীদের হাতে আক্রান্ত হতে হচ্ছে গেরুয়া শিবিরকে৷ একদিকে যেমন উত্তরবঙ্গের কোচবিহারে এক বিজেপি কর্মীকে মারধর করা হয়েছে৷ অন্যদিকে, নির্বাচন পরবর্তী হিংসার খবর এসেছে দক্ষিণবঙ্গের কাঁকসা, দেগঙ্গা ও বনগাঁ থেকে৷
[ আরও পড়ুন: বিজেপিকে ভোট দেওয়ায় গ্রামে ঢুকে ‘দাদাগিরি’, তৃণমূল নেতাদের পালটা গণধোলাই]
প্রথম ঘটনাটি ঘটেছে কোচবিহারের ১ নম্বর ব্লকের সুটকাবাড়ি এলাকায়৷ শনিবার রাতে ওই এলাকার বিজেপি কর্মী মহম্মদ আলিকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে৷ অভিযোগের তির স্থানীয় তৃণমূল নেতা সিরাজুল হকের বিরুদ্ধে৷ অভিযোগ, শনিবার রাতে দলবল নিয়ে ওই বিজেপি কর্মীর উপর চড়াও হয় সিরাজুল৷ বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁকে৷ মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়৷ এরপর গুরুতর জখম অবস্থায় মহম্মদ আলিকে কোচবিহার সরকারি মেডিক্যাল হাসপাতালে ভরতি করা হয়৷ মহম্মদ আলি জানান, লোকসভা নির্বাচনের আগেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি৷ বিজেপির হয়ে নির্বাচনে প্রচার করেন৷ এরপর কোচবিহার লোকসভা আসনটি বিজেপির নিশীথ প্রামাণিক জয় লাভ করায়, সেই রোষেই তাঁর উপর তৃণমূল হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ মহম্মদ আলির৷ যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি আবদুল জলিল আহমেদ৷ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কোতয়ালি থানার পুলিশ৷
দক্ষিণবঙ্গের জয়ী আসন বর্ধমান-দূর্গাপুরেও শনিবার রাতে আক্রান্ত হয়েছে বিজেপি৷ সেখানে বিজেপি কর্মী শেখ সালাউদ্দিনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে শাসকদলের কর্মী শেখ সাইসুলের বিরুদ্ধে৷ জানা গিয়েছে, সাইসুলের দলবলের হাতে আক্রান্ত হয়েছেন সালাউদ্দিনের পরিবারের সদস্যরা এবং আরও বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মী৷ গুরুতর জখম অবস্থায় শনিবার রাতেই তাদের ভরতি করা হয় দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে৷ স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, সন্ত্রাসের আবহ তৈরি করতেই তৃণমূল হামলা চালিয়েছে৷ পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তারও অভিযোগ তুলেছে গেরুয়া শিবির৷ যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব৷
[ আরও পড়ুন: ভোটে হেরে সোশ্যাল মিডিয়ায় দুঃখপ্রকাশ বর্ধমান পূর্বের বিজেপি প্রার্থীর ]
এছাড়া শনিবার রাত থেকেই তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে উত্তপ্ত দেগঙ্গার হাদিপুর-ঝিকড়া (১) পঞ্চায়েত৷ সূত্রের খবর, দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে তৃণমূলের ১২ জন কর্মী আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে আসে দেগঙ্গা থানার পুলিশ। রবিবার সকালেও এলাকায় জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা৷ এলাকায় উত্তেজনা ছড়ানোর অভিযোগে, শনিবার রাতেই গ্ৰেপ্তার করা হয় হাদিপুর-ঝিকড়া (১) পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান বিজেপির জগন্নাথ দাসকে। বিজেপির অভিযোগ, সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে ওই গ্রামে ভাল ফল করেছে দল৷ সেকারণেই তৃণমূল হামলা করেছে৷ একই ভাবে বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রেও দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হয়েছেন এক বিজেপি কর্মী৷ এক্ষেত্রেও কাঠগড়ায় শাসকদল৷ আক্রান্ত যুবকের নাম শান্তনু মালাকার। আক্রান্তের বাড়ি বনগাঁ থানার অন্তর্গত ঢাকা পাড়া এলাকায়। অভিযোগ, শনিবার রাতে বনগাঁর দিনবন্ধু নগর এলাকা থেকে যখন ব্যক্তিগত কাজ সেরে ফিরছিলেন তিনি, তখন তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়৷ ইট দিয়ে আঘাত করে তাঁর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়৷ তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই একাজ করেছে বলে অভিযোগ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের৷ বনগাঁ পুরমণ্ডলের বিজেপির যুব সভাপতি রাজীব রায় বলেন, ‘‘ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকেই তৃণমূল আমাদের কর্মী-সমর্থকদের ভয় দেখাচ্ছে, মারধর করছে৷’’ যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.