রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: অমিত শাহের সভার পরই উত্তপ্ত কাঁথি৷ দলীয় কর্মীদের একের পর এক বাস এবং বাইকে ভাঙচুর করা হয়৷ আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় তাতে৷ বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই হামলা চালিয়েছে৷ যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে৷
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ মঙ্গলবার কাঁথিতে একটি জনসভা করেন৷ ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্য সম্পাদক সায়ন্তন বসু৷ এদিনের মঞ্চ থেকে কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘‘আপনারা সবাই একসঙ্গে যান। যারা ভাঙছে, তাদেরও ভেঙে দিন৷’’ এই বার্তা দিয়ে দলীয় নেতা মঞ্চ থেকে নেমে যাওয়ার পরেই তৃণমূল কার্যালয়ে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, বাধা দিতে গেলে পুলিশের উপরেও হামলা চালানো হয়৷ পুলিশের একাধিক গাড়ি ভেঙে দেয় বিজেপি কর্মীরা। মাটিতে ফেলে লোহার রড দিয়ে মারধর করা হয় পার্টি অফিসে থাকা তৃণমূল কর্মীদের। কলকাতা থেকে দিঘা যাওয়ার পথে দু’টি সরকারি গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। এছাড়া একটি বাইকেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ন’জন তৃণমূল কর্মী আক্রান্ত হয়েছেন৷ বিজেপির পালটা অভিযোগ, শাসক দল তাদের কর্মীদের গাড়ির কাচ ভেঙে দেয়। এই অভিযোগ তুলে দিঘা-নন্দকুমার ১১৬বি জাতীয় সড়কের চণ্ডীপুর লাগোয়া ক্ষুদিরাম মোড়ে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে অবরোধকারীদের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাঁধে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে দুই পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন। তাঁদের কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে।খবর পেয়েই আহতদের দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার কাঁথির পদ্মপুখুরিয়া গ্রামে আয়োজিত বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের সভায় তিরধনুক হাতে নিয়ে আসতে দেখা যায় কর্মীদের। শাসক দলের অভিযোগ, বিজেপি প্রচার পাওয়ার জন্যে নিজেরাই রাস্তায় থাকা সরকারি গাড়ি-সহ নিজেদের কর্মীদের গাড়ি ভাঙচুর করেছে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরির জন্য ঝাড়গ্রাম, খড়গপুর, হাওড়া-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে কর্মীদের নিয়ে এসেছিল বিজেপি।
অশান্তি প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী বলেন, ‘‘সাড়ে ছ’ফুটের মঞ্চ দেড় হাজার চেয়ার পাতিয়ে ওড়িশা, ঝাড়খন্ড-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এনে শক্তি দেখানোর চেষ্টা হয়েছে। সেইসঙ্গে তিরধনুক, লোহার রড নিয়ে আসা হয়েছিল কাঁথি শহরে অশান্তি পাকানোর জন্য। পার্টি অফিস ভাঙচুর, সরকারি গাড়ি ভাঙচুর, বাইক পোড়ানো তারই প্রতিফলন।” তবে অমিত শাহর সভার পরই এমন অশান্তির ঘটনা ভাল নজরে মোটেই দেখছে না কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.