সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: রাজ্য রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ! সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচনে জোট বাঁধল তৃণমূল ও জাতীয় কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন। দুর্গাপুর স্টিল পিপলস কো অপারেটিভ ব্যাঙ্কের নির্বাচনে আইএনটিটিইউসি ও ইনটাকের জোট। সেই দলে রয়েছে এইচএমএস অর্থাৎ হিন্দ মজদুর সভাও। শ্রমিক ও ব্যাঙ্কের স্বার্থে জোট বেঁধে লড়াই বলে দাবি আইএনটিটিইউসি ও ইনটাক, এইচএমএস নেতৃত্বের।
বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুর্গাপুর স্টিল পিপলস কো অপারেটিভ ব্যাঙ্কের মনোনয়ন পত্র তোলা ও জমা দেওয়ার দিন ছিল। ভোট গ্রহণের কথা ছিল ৯ মার্চ। কিন্তু জোট বিরোধীরা মনোনয়ন দাখিল না করায় নির্বাচন হবে না।
২০১২ সালে শেষ নির্বাচন হয়েছিল এই ব্যাঙ্কে। সব আসনেই জয়ী হয় আইএনটিটিইউসি। ২০১৫ সালের পর থেকে প্রশাসক নিয়োগ করে ব্যাঙ্ক চলছিল। আরবিআইয়ের গাইডলাইন অনুযায়ী নির্বাচিত বোর্ড না থাকলে ব্যাঙ্কিং লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে এই কারণেই ভোটের আয়োজন। এই ভোটে মোট আসন ৪২টি। এরমধ্যে ৬টি আসন ছাড়া হয়েছে ইনটাককে। ৩টি আসনে সড়ছে এইচএমএস। বাকি আসনগুলিকে লড়বে আইএনটিটিইউসি। মোট ভোটার ১২ হাজার ১৬৯ জন।
মনোনয়নের দুই দিন ব্যাঙ্ক চত্বরে বহিরাগতদের ভিড় করিয়ে বিরোধীদের মনোনয়ন দিতে বাধা দিয়েছে তৃণমূল অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। ডিএসপি সিটুর কার্যকারি সভাপতি বিশ্বরুপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “গণতন্ত্রকে হত্যা করে অনৈতিক জোট। জোট ছাড়া কেউ মনোনয়ন দিতে পারেনি। বহিরাগতদের নিয়ে সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি করেছিল তৃণমূল। এত ভয় কিসের? জোট করেও ভোট লুঠ করতে হবে? এর দায় জোটকেই নিতে হবে। সমবায় ব্যাঙ্কের ভোটেও সন্ত্রাস করতে হচ্ছে শাসকদলকে। এটা লজ্জার।” তবে এই জোট ভবিষ্যতের রাজ্য রাজনীতিতেও প্রভাব ফেলবে বলেই তিনি মনে করছেন।
কী অঙ্কে জোট হল আইএনটিটিইউসি ও ইনটাকের ও এইচএমএসের? ডিএসপি আইএনটিটিইউসির সহকারি সাধারণ সম্পাদক স্নেহাশীস ঘোষের দাবি, “শ্রমিক ও ব্যাঙ্কের উন্নয়নের স্বার্থে আমরা চেয়েছিলাম সব শ্রমিক সংগঠন মিলে বোর্ড গড়ি। সিটুকেও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। বিএমএস শেষ সময়ে যোগাযোগ করেছে। উচ্চ নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করেই জোট করা হয়েছে।” ডিএসপি ইনটাকের সাধারণ সম্পাদক রজত দীক্ষিত জানান, “সরাসরি কারখানার কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কর্মীদের স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে। আইএনটিটিইউসি প্রথম জোটের প্রস্তাব দেয়। রাজ্য নেতৃত্বের কাছে অনুমতি নিয়ে আমরা তাতে সাড়া দিয়েছি। এটা একটা সমঝোতা মাত্র।” বিএমএসের সাধারণ সম্পাদক সুকান্ত রক্ষিত জানান, “বাম আমলে এই ব্যাঙ্কের কোনও উন্নতি দেখিনি। এটা বাস্তব বোর্ডে পরিবর্তনের পর আইএনটিটিইউসির আমলে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। তৃণমূল ও আইএনটিটিইউসির কাছ থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর বাম ও বিজেপিকে ঠেকাতে আমরা জোটে আগ্রহী হই।” ১২ জনের বোর্ড অফ ডিরেক্টর তৈরি হবে মার্চ মাসে।
এদিকে, আইএনটিটিইউসি ও ইনটাকের ‘বন্ধুত্ব’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের জেলা সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তী বলেন, “কার সঙ্গে কথা বলে অনুমতি নিয়ে এই জোট হল তা আমাদের অজানা। কেন জোট হল তাও জানিনা। ইনটাক ও কংগ্রেসের প্রদেশ নেতৃত্বের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলব।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.