দীপঙ্কর মণ্ডল: মাধ্যমিকে একের পর এক প্রশ্ন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ফাঁস হয়েছে। সাতটির মধ্যে ছটি বিষয়ের প্রশ্নপত্রই পরীক্ষা শুরুর আধঘণ্টার মধ্যেই ফাঁস হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। যার জেরে এবছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা ‘নজিরবিহীন’ তকমা পেয়েছে। তা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বাড়তি সতর্কতা নিয়েছে সংসদ। আগামী মঙ্গলবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু এবছরের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। চলবে ১৩ মার্চ পর্যন্ত। শনিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারপার্সন মহুয়া দাস স্পষ্টই জানিয়ে দিলেন, পরীক্ষাকেন্দ্রে এবার আরও কড়া নজরদারি চলবে সংসদের তরফে।
[হোয়াটসঅ্যাপে চুরি ও খুনের গুজব ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার ১]
এবারের উচ্চমাধ্যমিকে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৮,১৬,২৩৪ জন। পরীক্ষার হলে প্রবেশের সময় কারও কাছে মোবাইল পাওয়া গেলে, তা বাজেয়াপ্ত হবে। এবং অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনা করে, তার রেজিস্ট্রেশন বাতিল হতে পারে আজীবনের জন্য। অর্থাৎ কোনওদিনই সে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের কোনও পরীক্ষায় বসতে পারবে না। মহুয়া দাস আরও জানিয়েছেন, ‘ভেন্যু সুপারভাইজারদের নির্দিষ্ট দায়িত্ব-সহ আই কার্ড দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের উপরেই ন্যস্ত থাকছে সব ভার। তাঁদের জন্য আলাদা করে কন্ট্রোল রুম চিহ্নিত করা হয়েছে। তার নিরাপত্তায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এক চতুর্থাংশ পরীক্ষাকেন্দ্রে থাকবে মোবাইল ডিটেকশন সেন্টার।’ পরীক্ষাকেন্দ্রের ভিতরের নিরাপত্তা নিয়েও আলাদা নিয়মের কথা ঘোষণা করেছেন সংসদের চেয়ারপার্সন। জানানো হয়েছে, পরীক্ষা শুরু অর্থাৎ সকাল ঠিক ১০টার ঘণ্টা বাজার পরই মুখবন্ধ খাম খুলে প্রশ্নপত্র বিতরণ করতে হবে। সব ক্লাসরুমে প্রশ্ন দেওয়া হয়ে গেলে, খামটি ফের মুখবন্ধ করে ফেরত দিতে হবে ইনভিজিলেটরকে। যিনি খাম দিচ্ছেন আর যিনি খাম নিচ্ছেন, দুজনকেই স্বাক্ষর করতে হবে। এরপর পরীক্ষা শেষে তা সংসদে জমা দিতে হবে। প্রতিদিনের এই রেকর্ড তথ্য আকারে লিখে রাখবেন ইনভিজিলেটররা। পরীক্ষা শুরুর ১ সেকেন্ড আগেও যদি প্রশ্নপত্রের খাম খোলা হয়, তাহলে তা কম্পিউটার ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে চিহ্নিত করা যাবে এবং তার বিরুদ্ধে সংসদ ব্যবস্থা নেবে।
[পুলিশ আধিকারিকের স্ত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যু, বাড়ি থেকে উদ্ধার ঝুলন্ত দেহ]
পরীক্ষা চলাকালীন প্রতিটি ক্লাস রুমে থাকবেন ৩ জন করে পর্যবেক্ষক। যাঁদের মধ্যে একজন হবেন মোবাইল ইনভিজিলেটর। পরীক্ষা শুরুর একঘণ্টার আগে কোনও পরীক্ষার্থী বাইরে বেরোতে পারবে না। এমনকী জল খাওয়া, শৌচালয় যাওয়ার জন্যেও তাদের হল থেকে বেরোনোর অনুমতি দেওয়া হবে না বলে এদিন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন সংসদের চেয়ারপার্সন মহুয়া দাস। সামগ্রিক পরীক্ষা পদ্ধতিতে কোথাও নজরদারির গাফিলতি হলে, তা বরদাস্ত হবে না বলে কড়া হুঁশিয়ারি সভাপতির। পরীক্ষা যতদিন চলবে, তার মধ্যে সংসদের কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুম ২৪x৭ খোলা থাকবে। কোনওরকম অভিযোগ, সমস্যা হলে কন্ট্রোল রুমে জানানো যাবে। সাংবাদিক বৈঠকের শেষাংশে সংসদের চেয়ারপার্সন সতর্কবার্তা দিয়েছেন, ‘পরীক্ষার্থী, অভিভাবকদের উদ্দেশে বলছি, কোনওরকম গুজবে কান দিয়ে প্ররোচনামূলক কাজ করবেন না। রাজ্যের সমস্ত পরীক্ষাকেন্দ্রগুলিতে যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্পর্শকাতর কেন্দ্রের উপর বাড়তি নজর রাখতে সাইবার ক্রাইম শাখাকেও অ্যালার্ট করা হয়েছে। সকলের সহযোগিতা কাম্য।’ মাধ্যমিকের প্রশ্নফাঁসের পর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা সংসদের কাছে রীতিমতো চ্যালেঞ্জের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.