সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: বাড়ছে রয়েল বেঙ্গল রহস্য! দিনভর একটি মহিষকে বান্দোয়ানের পাহাড়ে ড্যাম লাগোয়া এলাকায় টোপ হিসাবে ব্যবহার করেও বাগে আনা গেল না বাঘকে। বিকেলের দিকে পাহাড় সন্নিহিত কেসরা গ্রামের বাসিন্দাদের কাছ থেকে দুটো শূকর কিনে খাঁচাবন্দি করা হয়েছিল। নয়া টোপ প্রস্তুত করতে সন্ধ্যা গড়িয়ে যায়। যদিও রাত পর্যন্ত টোপের টানে ধরা দেয়নি বাঘিনী। হাতে রাখা হয়েছে ওড়িশার বারিপোদার সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে আনা দুটি মহিষ ও ছাগল। এছাড়াও রাইকা পাহাড় এলাকা থেকে কেনা হয়েছে আরও দুটি ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট। আসলে গত এক মাসে মহিষ, ছাগলের টোপ কাজে লাগেনি। তাই শূকর কিনে খাঁচায় রাখা। স্বাদে বদলালে যদি ‘বাঘবন্দি খেলা’র অবসান হয়। আতঙ্ক ফুরোয় মানুষের।
রবিবার দুপুর ১২টা ১৫-র পর রাইকা পাহাড়ে জিনাত নিরুদ্দেশ হয়েছিল। এরপর বিকেল ৫টা নাগাদ জঙ্গল রানিকে ট্র্যাক করতে নানান যন্ত্রপাতি আনা হয় কেশরার জঙ্গলে। ছিল সঙ্কেতপাঠের অ্যান্টেনা। জিনাতের গলায় যে রেডিওকলার রয়েছে। পুরুলিয়া বন বিভাগের ডিএফও অঞ্জন গুহ বলেন, “আমরা যা খবর পাচ্ছি তাতে বাঘিনী জঙ্গলে সুস্থ অবস্থায় রয়েছে। বান্দোয়ান এলাকার মানুষজনের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমরা সব সময় সতর্ক, সচেতন রয়েছি। জঙ্গলে আমাদের যেমন ম্যানুয়ালি নজরদারি চলছে তেমনই প্রযুক্তিও আমরা ব্যবহার করছি। মোট ১৫টি টিম কাজ করছে। এছাড়া ট্রাঙ্কুলাইজার টিম, স্যাটেলাইট মনিটরিং, থার্মাল ইমেজ স্ক্যানিং, নাইট ভিশন ড্রোন মনিটরিং-এর মাধ্যমে বাঘিনীর সঠিক অবস্থান বোঝার চেষ্টা হচ্ছে।”
বনদপ্তরের বক্তব্য, পাহাড়ের একটি অংশে ১০০ মিটার এলাকায় বাঘিনীর অবস্থানের খবর মেলায় শূকরের টোপ দেওয়া হয়েছিল। বনদপ্তর জানিয়েছে, কয়েকদিন ওই বাঘিনীটি সেভাবে কিছু খাইনি। তাই টোপের কাছেই তাকে কাবু করতে ট্রাঙ্কুলাইজার টিম রাখা হয়েছিল।
এদিন সকালে ট্র্যাকিং করার পর বান্দোয়ান বনাঞ্চলের অতিথি আবাসে বাঘবন্দির রূপরেখা তৈরি করেন বাংলা-ওড়িশার বন আধিকারিকরা। সন্ধ্যা নামলে অভিযানে শামিল হন মুখ্য বনপাল (দক্ষিণ-পশ্চিম চক্র) বিদ্যুৎ সরকার, কংসাবতী দক্ষিণ বন বিভাগের ডিএফও পূরবী মাহাতো, পুরুলিয়া বন বিভাগের ডিএফও অঞ্জন গুহ, সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পের দুই ফিল্ড ডিরেক্টর-সহ সুন্দরবনের টিম। যদিও রাত পর্যন্ত বাঘকে বাগে আনা যায়নি বলেই খবর। অর্থাৎ কিনা বান্দোয়ানে বাড়ছে রয়েল বেঙ্গল রহস্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.