শুভদীপ রায় নন্দী, শিলিগুড়ি: সোনা পাচার করতে গিয়ে গ্রেপ্তার তিন যুবক। গুয়াহাটি থেকে কোভিড স্পেশ্যাল ট্রেনে ওই বিপুল পরিমাণ সোনা পাচারের পরিকল্পনা করেছিল পাচারকারীরা। কিন্তু পাচারের আগেই অভিযান চালিয়ে ওই তিন পাচারকারীকে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে গ্রেপ্তার করে কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা দপ্তরের (ডিআরআই) আধিকারিক ও কর্মীরা। উদ্ধার হয়েছে ১৬০টি সোনার বিস্কুট। প্রতিটির ওজন ১৬৬ গ্রাম করে। মোট ২৪ কেজি ৫৬০ গ্রাম সোনা উদ্ধার হয়েছে। যার বাজারমূল্য প্রায় ১৫ কোটি টাকা। ডিআরআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতরা হল সৌরভ সমরভ শীরকাণ্ডে, সন্দেশ আপ্পা নারালে ও শশীকামত নারালে কুটে। তিনজনই মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা।
গোয়েন্দা সংস্থার চোখে ধুলো দিয়ে সোনা পাচারের জন্য ক্রমে নতুন ফন্দি আটছে পাচারকারীরা। কখনও কোমরের বেল্টে, কখনও জুতোর ভিতরে করে পাচার করা হচ্ছে সোনা। এবার করোনা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কোভিড স্পেশ্যাল ট্রেনে পাচারের চেষ্টা করেছিল তারা। তবে পাচারকারীর সেই ছক বানচাল করল কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা দপ্তর (ডিআরআই)। তবে পাচারকারীরা এই ধরনের পন্থা অবলম্বন করায় উদ্বিগ্ন তদন্তকারী সংস্থা। শুক্রবার রাতে শিলিগুড়ির নিউ জলপাইগুড়ি রেল স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে গুয়াহাটি-দিল্লি ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেনে অভিযান চালিয়ে সোনা পাচারের অভিযোগে ওই তিন যুবককে গ্রেপ্তার করে ডিআরআই। অভিযুক্তদের শনিবার সকালে শিলিগুড়ি আদালতে তোলা হলে বিচারক জামিনের আবেদন খারিজ করে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। এ বিষয়ে আইনজীবী ত্রিদীপ সাহা বলেন, “অভিযুক্তদের আদালতে তোলা হলে বিচারক জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। ঘটনায় আরও কেউ জড়িত রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে ডিআরআই।”
ডিআরআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে সৌরভ মহারাষ্ট্রের সাঙ্গলি জেলার লিঙ্গিভারে গ্রামের, শশীকান্ত ওই জেলারই পুজারওয়াড়ির ও সন্দেশ সাতারা জেলার গাঁওনথানের বাসিন্দা। মায়ানমার থেকে সোনা নিয়ে ইন্দো-মায়ানমারের মোরেহ সীমান্ত পার করে এদেশে ঢুকেছিল বলে জানা গিয়েছে। সেখান থেকে অসমের গুয়াহাটি হয়ে ট্রেনে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হত সোনা। তারপর তা মহারাষ্ট্রে পাচারের পরিকল্পনা ছিল বলে জানা গিয়েছে। পাচারের বিষয়টি গোপন সূত্রে জানতে পারে তদন্তকারী সংস্থা। আলিপুরদুয়ার জংশন রেল স্টেশন থেকে তদন্তকারী সংস্থার কয়েকজন গোয়েন্দা অভিযুক্তদের পিছু করতে থাকে। যুবকরা পিছু নেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে অন্য কোনও স্টেশনে যাতে নেমে না পরে তার জন্য কামরার দু’পাশ থেকেই তাদের উপর নজর রাখছিল গোয়েন্দারা। অন্যদিকে, নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে অপেক্ষা করছিল সংস্থার আধিকারিকদের আরেকটি দল। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে ট্রেন ঢোকামাত্রই পাকড়াও করা হয় যুবকদের। তাদের কাছে থেকে সোনার বিস্কুট লুকনোর জন্য বিশেষভাবে তৈরি কোমরের বেল্ট পাওয়া যায়। তার ভিতর থেকে উদ্ধার হয় ওই সোনার বিস্কুটগুলি। এরপরই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.