নিজস্ব সংবাদদাতা, বনগাঁ: একসঙ্গে অনেকদিন সময় কাটানো হয় না। তাই ভেবেছিলেন পাঁচ বোন কয়েকটা দিন কাটাবেন। তাই সবাই মিলে বেড়াতে গিয়েছিলেন কেরলে। কিন্তু সেখানে গিয়েই ঘটল বিপদ। ঈশ্বরের দেশে বেড়াতে গিয়ে দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল বনগাঁর ট্যাংরা গ্রামের বাসিন্দা তিন বোনের। জখম অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন আরও দুজন।
গত ১৫ অক্টোবর শালিমার স্টেশন থেকে পাঁচ বোন ট্রেনে চড়েন। তিরুঅনন্তপুরমে যাওয়ার কথা ছিল তাঁদের। নির্দিষ্ট সময়ে ওই জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিলেন শোভা বিশ্বাস, গীতা রায়, মিতা বর্মন, লক্ষ্মী হালদার এবং কাকলি ভদ্র নামে পাঁচ বোন। শুক্রবার দুপুরে শেষবার শোভা বিশ্বাসের সঙ্গে তাঁর বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথাও হয়। এরপর আসে দুঃসংবাদ। এই মহিলাদের পরিজনেরা জানতে পারেন, শুক্রবার দুপুরে কেরলের ত্রিবান্দমপুরামে ৪৭ নম্বর জাতীয় সড়কের আলপুজ্জার ভান্দারামে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তাঁদের গাড়ি। তাতেই ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান তিন বোন। তাঁরা হলেন, গীতা রায়, মিতা বর্মন এবং শোভা বিশ্বাস। বাকি লক্ষ্মী হালদার এবং কাকলি ভদ্র নামে আরও দুই বোন দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন। কেরলের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তাঁদের। প্রত্যেকের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক।
শোভা বিশ্বাসের ছেলে মলয় বলেন, “মায়েরা অনেকদিন পর একসঙ্গে বেড়াতে গিয়েছেন। মা-মাসি সকলেই খুব খুশি হয়েছিলেন। শুক্রবারই জানতে পারি আমাদের এত বড় বিপদ হয়েছে। বেড়াতে গিয়ে যে এভাবে মা মারা যাবেন তা ভাবতে পারিনি। আমরা কীভাবে বাস্তবটা মানব তা বুঝতে পারছিনা। জখম দুই মাসি সুস্থ হয়ে ওঠার পর কীভাবে দুর্ঘটনাটা মানবে তাও জানিনা।” দুর্ঘটনা ঠিক কীভাবে ঘটল, তা এখনও পরিষ্কার নয়। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
এদিকে, দুর্ঘটনায় তিন বোনের মৃত্যুর পর থেকে বনগাঁ ট্যাংরা গ্রামে নেমেছে শোকের ছায়া। চোখের জলে ভাসছেন পরিজনেরা। কান্নার শব্দে ভারী প্রায় গোটা এলাকা। কেরল থেকে কবে এই বাড়িতে দেহ আসবে, আপাতত সেই অপেক্ষায় দিন গুনছেন প্রত্যেকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.