সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে মৃত্যু একই পরিবারের তিনজনের। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলার (Maheshtala) আক্রা কৃষ্ণনগর পূর্ব মণ্ডল পাড়ার ঘটনা। ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার মহিলা এবং তাঁর দুই ছেলের দগ্ধ দেহ। কীভাবে বাড়িটিতে আগুন লাগল তা এখনও স্পষ্ট নয়। দুর্ঘটনা নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে বাড়িটিতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। মৃতার স্বামীর সঙ্গে কথাবার্তা বলছেন তদন্তকারীরা।
মহেশতলার আক্রা কৃষ্ণনগর পূর্ব মণ্ডল পাড়ার বাসিন্দা গোপাল গায়েন তাঁর পরিবার নিয়ে দোতলা বাড়িতে থাকেন। ওই বাড়ি সংলগ্ন একটি টালির একতলা বাড়িও রয়েছে। সেই বাড়িটি ভাড়া দিতেন তিনি। সেখানেই পেশায় সবজি বিক্রেতা প্রভাস মণ্ডল, তাঁর স্ত্রী সোমা, দুই সন্তান সাহেব ও রাহুল থাকত। ব্যবসার কাজে কাকভোরে উঠতে হয় প্রভাসকে। তাই রাতে কখনই বাড়িতে থাকতেন না তিনি। নিজের সবজির দোকানে থাকতেন। শনিবার রাতেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। রাতে স্ত্রী ও দুই ছেলেই শুধুমাত্র ভাড়াবাড়িতে ছিলেন।
রাত ১২টা নাগাদ স্থানীয়রা পোড়া গন্ধ পেতে শুরু করেন। তড়িঘড়ি বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন তাঁরা। ততক্ষণে অবশ্য ওই একতলা বাড়ির বেশিরভাগ অংশই আগুনে গ্রাস করেছে। খবর দেওয়া হয় দমকলে। তবে দমকল কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর আগেই আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন প্রতিবেশীরা। জল ঢেলে বাড়ির আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়। বেশ কিছুক্ষণ পর দমকলের দু’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। বাড়ির আগুন পুরোপুরি নেভান দমকল কর্মীরা। ওই বাড়ির ভিতর থেকে বছর সাতচল্লিশের সোমা এবং তাঁর বড় ছেলে সাহেব ও ছোট ছেলে রাহুলের দগ্ধ দেহ উদ্ধার করে। পুলিশ দেহগুলি ময়নাতদন্তে পাঠায়।
কীভাবে ওই বাড়িটিতে আগুন লেগে গেল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। প্রথমে স্থানীয়রা মনে করেছিলেন গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। তবে পরে দেখা যায় সিলিন্ডার থেকে গ্যাস লিক করছে ঠিকই। তবে সেটি বিস্ফোরণ ঘটেনি। গ্যাস সিলিন্ডারটি আপাতত এলাকার পুকুরে ফেলে রাখা হয়েছে। শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে দুর্ঘটনা নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে ওই বাড়িটিতে কেউ আগুন লাগিয়ে দিল, তাও ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। নিহত মহিলার স্বামী ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথাবার্তা বলছে পুলিশ। রবিবার ঘটনাস্থলে যেতে পারে ফরেনসিক টিম।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.