সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: ফের তিন করোনা আক্রান্তের হদিশ মিলল দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার মগরাহাটে। এবার আক্রান্তের তালিকায় ঢুকল মগরাহাট থানা এলাকার ১০-১৩ বছর বয়সী তিন নাবালিকা। তিনজনকেই চিকিৎসার জন্য রাজারহাটে চিত্তরঞ্জন ন্যাশানাল ক্যানসার ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। ওই তিনজনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সংস্পর্শে আসা মানুষজনকে চিহ্নিত করে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে প্রশাসন।
মগরাহাট ২ নম্বর ব্লকের মহেশপুরের বিয়াসপুরে পেশায় রঙের মিস্ত্রী এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছিল ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে। মৃত্যুর পর জানা গিয়েছিল, তিনি করোনা পজিটিভ ছিলেন। এরপরই মগরাহাট থানা এলাকায় তাঁর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সংস্পর্শে আসা ৫৯ জনকে শনাক্ত করে তাঁদের লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। সেই রিপোর্ট এসে পৌঁছাতেই জানা গেল, করোনা আক্রান্ত এই তিন নাবালিকা। আক্রান্তরা মৃত ব্যক্তির পরিজন বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। ইতিমধ্যেই ওই তিন আক্রান্তের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। ডায়মন্ড হারবার মহকুমা প্রশাসনের এক কর্তা জানিয়েছেন, “মগরাহাট থানা এলাকাই এখন প্রশাসনের কাছে যথেষ্ট চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে মগরাহাট ২ নম্বর ব্লকের মহেশপুর এলাকা ক্রমেই উদ্বেগ বাড়াচ্ছে প্রশাসনের। প্রথমে এক ব্যক্তির মৃত্যু ও রবিবার ওই মৃত ব্যক্তির প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে আসা তিন শিশুর রিপোর্ট পজিটিভ আসায় চিন্তিত প্রশাসন। এই উদ্বেগের সবচেয়ে বড় কারণ তিন শিশুই তাদের পরিবার ও এলাকায় স্বাভাবিকভাবেই বহু লোকের সংস্পর্শে এসেছিল।”
তবে আশার কথা ডায়মন্ড হারবারের পারুলিয়া পঞ্চায়েতের জয়দেবপুর গ্রামে যে ফল
বিক্রেতার করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছিল সেই ব্যক্তি এখন অনেকটাই সুস্থ রয়েছেন। বর্তমানে এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তাঁর। তাঁর প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে আসা পরিবারের ১১ জন ও পরোক্ষ সংস্পর্শে আসা আরও ৭২ জনের সকলেরই লালারসের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় স্বস্তি মিলেছে ডায়মন্ডহারবার স্বাস্থ্য জেলার কর্তাদের।
এদিকে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় সোমবার থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে করোনা সংক্রমণ রুখতে ব়্যাপিড টেস্ট। ডায়মন্ড হারবারে এদিন সাংবাদিক, পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্মীদের লালারস সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এখন থেকে টানা একুশদিন ডায়মন্ড হারবার পুরসভার ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরবে মোবাইল ভ্যান। বিশেষ বিশেষ জায়গায় ক্যাম্প করে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করবে ওই মোবাইল ভ্যান। পরীক্ষার রিপোর্ট এলে তা পাঠিয়ে দেওয়া হবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে। জেলার ডায়মন্ড হারবার, কাকদ্বীপ, বারুইপুর, ক্যানিং ও আলিপুর মহকুমার ব্লকে ব্লকে ঘুরেও একইভাবে এই রাপিড টেস্টের কাজ চলবে। মোবাইল পরিষেবা ছাড়াও বিভিন্ন ব্লকে বসানো হয়েছে স্ট্যাটিক কিয়স্কও। সেখানে গিয়েও যে কোনও ব্যক্তি তাঁদের সোয়াব টেস্ট করিয়ে আসতে পারবেন।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.