সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: রাজ্যে ক্রমশই বাড়ছে করোনা আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় প্রথম তিনজনের শরীরে থাবা বসায় করোনা। পরিযায়ী ওই তিন শ্রমিক কুশমণ্ডির বাসিন্দা। দিনকয়েক আগেই নিজের এলাকায় ফেরেন তাঁরা। কুশমণ্ডি ব্লকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে ছিলেন সকলে। মালদহের সোয়াব টেষ্টের রিপোর্ট হাতে আসার পরই জানা যায় তাঁরা করোনা আক্রান্ত। তিনজনকেই উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের কোভিড হাসপাতালে রাখা হয়েছে।
তার পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রামেও ফের করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। আউশগ্রামের গঙ্গারামপুর গ্রামে ১৯ বছরের যুবকের শরীরে করোনার থাবা। ওই যুবক দীর্ঘদিন ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। তাঁকে নিয়মিত ডায়ালিসিস করাতে হয়। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁচদিন আগে বীরভূমের সিয়ান হাসপাতালে ওই যুবককে ডায়ালিসিস করানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানেই চিকিৎসকদের সন্দেহ হলে তাঁর করোনা পরীক্ষা করা হয়। যুবক যথারীতি বাড়িও চলে আসেন। শনিবার রাতে তাঁর রিপোর্ট হাতে আসার পর জানা যায় তিনি করোনা আক্রান্ত।
ওই যুবক ২ বি জাতীয় সড়কে হামিরপুর বাসস্ট্যান্ডে রয়েছে গঙ্গারামপুর গ্রামের বাসিন্দার সেলুন। লকডাউনে সেলুন খোলার অনুমতি যদিও প্রশাসন এখনও দেয়নি। অভিযোগ, ওই সেলুনমালিক তার দোকানঘরটি বন্ধ রাখলেও দোকানের পিছন দিকে আড়ালে একটি গাছতলায় যথারীতি লুকিয়ে চুল দাড়ি কাটছিলেন কয়েকদিন ধরেই। করোনা আক্রান্ত ওই যুবক সিয়ান হাসপাতাল থেকে ফিরে আসার পরে সেলুনে গিয়েছিলেন। সে কারণেই সেলুন থেকে সংক্রমণের আশঙ্কা করছে প্রশাসন।
ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে প্রশাসনিক তৎপরতা। শনিবার গভীর রাত থেকেই ওই আক্রান্ত ব্যক্তির বাড়ির সামনে পুলিশবাহিনী পৌঁছয়। রবিবার সকাল থেকেই গঙ্গারামপুর গ্রামের সমস্ত রাস্তায় ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়। পাশাপাশি আক্রান্ত যুবকের পরিবারের ১৯ জন-সহ মোট ৩২ জনকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, এর আগে আউশগ্রামের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা ক্যানসার আক্রান্ত প্রৌঢ়া এবং তাঁর ছেলেও করোনা আক্রান্ত হন।
দক্ষিণ দিনাজপুর, পূর্ব বর্ধমানের পাশাপাশি মুর্শিদাবাদের ডোমকলের জিৎপুর নতুনপাড়াতেও মিলল করোনা আক্রান্তের হদিশ। কলকাতা ফেরত দুই খুড়তুতো ভাইয়ের শরীরে করোনা ধরা পড়েছে। ৪ মে তাঁরা এনআরএস হাসপাতালে এক বালিকার চিকিৎসা করিয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন। তারপর থেকেই তাঁদের জ্বর, কাশি-সহ বিভিন্ন করোনার উপসর্গ দেখা যায়। তার জেরে পরীক্ষা করা হয়। শনিবার রাতে রিপোর্ট পাওয়ার পরই নিশ্চিতভাবে জানা যায়, তাঁরা করোনা আক্রান্ত। রবিবার সকালে স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মীরা তাঁদের বহরমপুরে কোভিড হাসপাতালে ভরতি করেন। ইতিমধ্যেই তাঁর বাড়ির লোকজনদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা আর কাদের সংস্পর্শে এসেছিলেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.