শুভদীপ রায় নন্দী, শিলিগুড়ি: পুত্রবধূর করোনা হয়েছিল। তিনি ভাইরাসের সঙ্গে যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন। সংস্পর্শে থাকায় ওই মহিলার পরিবারের আরও তিন জনের শরীরে বাসা বেঁধেছে মারণ করোনা। শ্বশুর, জা এবং পরিবারের খুদে সদস্যও করোনায় আক্রান্ত হয়। তবে করোনা যুদ্ধে জয়ের হাসি হেসেছেন তাঁরা। তিনজনেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন। প্রশাসনিক আধিকারিকদের তত্ত্বাবধানেই কালিম্পংয়ের বাড়ি পৌঁছন। আপাতত আগামী ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে তাঁদের।
কর্মসূত্রে চেন্নাইতে থাকতেন কালিম্পং পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের উডেন রোডের বাসিন্দা বছর ৪৫-এর মহিলা। দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণা হওয়ার ঠিক আগে তিনি চেন্নাই থেকে ফিরেছিলেন বাড়িতে। পরেরদিন শ্বাসকষ্ট দেখা যায় তাঁর। বুকে ব্যথা ক্রমশ তীব্র হতে থাকে। প্রথমে শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যান তিনি। সেখান থেকে তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেই রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টে জানা যায়, তিনি করোনায় আক্রান্ত। আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয় তাঁকে।
গত ২৯ মার্চ দুপুর পর্যন্ত ওষুধে সাড়া দিচ্ছিলেন কালিম্পংয়ের ওই মহিলা। কিন্তু সন্ধে হতেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। তারপরই রাত ২টো নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। এদিকে, তাঁর সংস্পর্শে আসেন পরিবারের তিনজন। তাঁদের কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়। পরীক্ষার রিপোর্টে জানা যায়, মহিলার শ্বশুর, জা এবং পরিবারের খুদে সদস্য করোনায় আক্রান্ত। সেই অনুযায়ী তাঁদের মাটিগাড়ার হিমাটল বিহার নার্সিংহোমে রেখে চিকিৎসা শুরু হয়। দিনকয়েক টানা চিকিৎসার পর সুস্থ হন তিনজনই। শনিবারই তাঁদের কালিম্পংয়ের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়।
অনেকেই বারবার কোয়ারেন্টাইন সেন্টার কিংবা হাসপাতালে সঠিক পরিষেবা না পাওয়ার অভিযোগ তুলছেন। তবে করোনায় মৃত মহিলার শ্বশুর সেই অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিষেবা পেয়েছেন। করোনা নিয়ে অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলেও জানিয়েছেন ওই ব্যক্তি। তিনি বলেন, “সঠিক সময়ে চিকিৎসকদের কাছে গেলে করোনার কবল থেকে বাঁচা সম্ভব।” সুস্থ হয়ে ওঠা ওই ব্যক্তির একটাই আরজি, অকারণে বাইরে না বেরিয়ে রোগের হাত থেকে বাঁচতে চাইলে লকডাউন মেনে চলুন।
আরও পড়ুন:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.