ছবি: প্রতীকী।
অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: নদীর পাড়ে তাঁবু খাটিয়ে বাস। খাওয়াদাওয়া, ঘুম সবই সেখানে। নদীর জলেই স্নান সারেন তাঁরা। আট থেকে আশি সকলের ক্ষেত্রেই নিয়ম একইরকম। তাই পরিবারের খুদে সদস্যরা স্নান করতে নেমেছিল নদীতে। সকলেই ভেবেছিল জন্ম থেকে নদী দেখে যারা অভ্যস্ত তাদের তলিয়ে যাওয়ার কোনও ভয় নেই। তাই কেউই তাদের খেয়াল করেনি। কিন্তু আচমকাই এক শিশু ডুবে যেতে থাকে। তাকে দেখে নিজেদের সামলে রাখতে পারেনি ২ শিশু। দু’জনেই খেলাধুলোর সঙ্গীকে বাঁচাতে হাত বাড়িয়ে দেয়। আর তাতেই ঘটে গেল অঘটন। নদীতে তলিয়ে মৃত্যু হল তিন শিশুকন্যার। রবিবার সকালে মর্মান্তিক এই ঘটনার সাক্ষী পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং (Sabang) থানার দেভোগ এলাকা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বেশ কয়েকটি পরিবার দিনকয়েক দেভোগের কপালেশ্বরী নদীর পাড়ে তাঁবু খাটিয়ে বসবাস করতে শুরু করে। ওই পরিবারগুলিরই সন্তান বছর ছয়ের বানো বেদ, দশ বছর বয়সি কদম শবর এবং বছর সাতেকের জানু শবর। রবিবার সকালে নদীর তীরে প্রাতঃকৃত্য সারে তারা। এরপর প্রায় একসঙ্গে নদীতে স্নান করতে নামে তিন শিশু। কিন্তু বুঝতে না পেরে নদীর কিছুটা গভীরে চলে যায় বানো। এরপর আর নিজেকে সামলাতে পারেনি সে। ক্রমশই নদীতে তলিয়ে যেতে থাকে। ছটফট করতে থাকে বানো। চোখের সামনে বন্ধুকে ছটফট করতে দেখে কদম এবং জানু তাকে উদ্ধার করতে যায়। কিন্তু কিছুতেই তাকে টেনে তুলতে পারেনি তারা। পরিবর্তে তিনজন নদীতে তলিয়ে যায়।
এদিকে, শিশুদের দেখতে না পেয়ে চিন্তায় পড়ে যান পরিজনেরা। নদীর তীরে শিশুদের খোঁজ করতে থাকেন তাঁরা। তবে দীর্ঘক্ষণ কেটে গেলেও খোঁজ মেলেনি। এই সময় আচমকাই নজরে আসে নদীর পাড়ে শিশুদের জামাকাপড় রাখা আছে। শিশুরা নদীতে নেমে আর উঠতে পারেনি বলেই সন্দেহ করেন স্থানীয়রা। এরপরই নদীতে তল্লাশি চালানো হয়। একে একে তিন শিশুর দেহ উদ্ধার করা হয়। খবর পেয়ে সবং থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তিন শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। পরিবারের উদাসীনতায় এমন কাণ্ড ঘটল বলেই দাবি এলাকাবাসীদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.