দেবব্রত মণ্ডল, গঙ্গাসাগর: লোকে লোকারণ্য গঙ্গাসাগর। মকর সংক্রান্তির প্রাক্কালে গঙ্গাসাগরের ছবিটাই পালটে গিয়েছে। চারিপাশে সাধুসন্ত আর পুণ্যার্থীদের ভিড়। তবে শুধু পুণ্যার্থী নয়, সেই সঙ্গে পেটের টানেও গঙ্গাসাগরে হাজির হয়েছেন অনেকে। বসেছেন পসরা সাজিয়ে।
প্রতিবছর গঙ্গাসাগর মেলায় ছবি তুলতে আসেন কলকাতার সঞ্জয় বিশ্বাস। তিনি জানালেন, রুজি রোজগারের আশায় প্রতি বছরই এই সময় গঙ্গাসাগরে হাজির হন তিনি। সাত আটদিনে মেলা থেকে যা উপার্জন হয় তাতে মোটামুটি বছরের অর্ধেকটা কেটে যায়। কেউ আবার সকাল সকাল সাগরে নেমে পড়েন পয়সা খুঁজতে। চৌম্বক দণ্ড নিয়ে এমাথা থেকে ওমাথা পর্যন্ত ছোটেন অতিরিক্ত রোজগারের আশায়। চুম্বক দণ্ড সঙ্গে উঠে আসে কয়েন।
সাগরের কৌশিক জানা জানান, ‘এই সময় স্কুল ছুটি থাকে তাই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ি ভোরবেলা। প্রতিদিন তিনশো থেকে চারশো টাকা রোজগার হয়। অন্যসময় তো এই উপার্জনের সুযোগ থাকে না। এই কটা দিন তাই নাওয়া-খাওয়া ভুলে সারাক্ষণ পড়ে থাকি সাগর তটে। শুধুমাত্র পুণ্য অর্জন নয়, পয়সা উপায় জন্যই ঠান্ডায় পড়ে থাকা।’ কেউ আবার সাগর তটে বসেছেন বহুরূপী সেজে। গামছা পেতে বসে থাকায় দু-চার টাকা যা পড়ছে তাই তুলে নিচ্ছেন পকেটে।
সেরকমই কাকদ্বীপের অনিমা দাস। প্রতিবছর গঙ্গাসাগরে আসেন তিনি। কখনও সাজেন কালী, কখনও দুর্গা আবার কখনও অন্যকিছু।
কারণ একটাই, পয়সা উপার্জন। অন্যদিকে, মোবাইল ফোনে চার্জ দিয়ে টাকা উপার্জনের আশায় কেরল থেকে কাজ ছেড়ে গঙ্গাসাগরে পৌঁছেছেন মহাদেব বারিখ। মোবাইল ফোন চার্জ দিয়ে এই কয়েকদিনেই প্রায় পাঁচ হাজার টাকা পকেটে ঢুকেছে তাঁর। প্রসঙ্গত, প্রতিবছর কাতারে কাতারে মানুষ সাগরে আসেন পুণ্য অর্জনের আশায়। এবছরও তার অন্যথা হয়নি।
ছবি: অরিজিৎ সাহা
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.