Advertisement
Advertisement

এখানেই ‘প্রাণ’ পেয়েছিলেন শরৎচন্দ্রের দেবদাস, মেলায় মাতল এই গ্রাম

গ্রামের মানুষদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশে বাঙালির ব্যর্থ প্রেমিক দেবদাস।

This village gives life to Devdas
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:January 17, 2019 11:34 am
  • Updated:January 17, 2019 11:34 am  

রিন্টু ব্রহ্ম, কালনা: শরৎচন্দ্রের দেবদাসের শেষ জীবনটা কেটেছিল পূর্ব বর্ধমানের এই গ্রামেই। এখানেই নাকি পার্বতীর শ্বশুরবাড়ি। এখান থেকেই শরৎচন্দ্র পেয়েছিলেন তাঁর উপন্যাসের নায়ককে। এমনই দাবি করেন কালনার নান্দাই গ্রামপঞ্চায়েতের হাতিপোতা গ্রামের বাসিন্দারা। তাই সেই দেবদাসের স্মৃতিকে আঁকড়ে ধরেই প্রতিবছর উৎসবে মাতেন হাতিপোতা গ্রামের বাসিন্দারা। সেই স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রেখেই এবছরও উপন্যাসের লেখক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যু দিন ১৬ জানুয়ারিকে সামনে রেখে শুরু হল ১৯তম দেবদাস স্মৃতি মেলা। বুধবার এই মেলার সূচনা করেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা এলাকার বিধায়ক স্বপন দেবনাথ। সঙ্গে ছিলেন অভিনেত্রী স্বস্তিকা দত্ত-সহ বিশিষ্টজনেরা। প্রতিবছরই এই দিনে সাহিত্যের সঙ্গে বাস্তবতাকে মেলাতে এক অনবদ্য উৎসবে মাতেন এই গ্রামের নতুন প্রজন্মের যুবক থেকে প্রবীণরা।

[বাবার ‘প্রেমিকা’কে অপহরণ, তিন ছেলের সাত বছরের কারাদণ্ড]

Advertisement

কালনা শহরে থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরেই অবস্থিত ‘হাতিপোতা’। গ্রামে ঢুকলেই বোঝা যাবে গ্রামের মানুষদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশে গিয়েছে বাঙালির ব্যর্থ প্রেমিক দেবদাস। দোকান, ক্লাব ঘর, খেলার টিম সব কিছুতেই দেবদাসের নাম যুক্ত। সব কিছুতেই শরৎচন্দ্রের ট্র্যাজিক চরিত্রটির উজ্জ্বল উপস্থিতি। কিন্তু কেন? স্থানীয়দের বিশ্বাস, হাতিপোতা গ্রামের পটভূমিতেই দেবদাস চরিত্রের জন্ম দিয়েছিলেন লেখক৷ তাই গ্রামের ক্লাব, স্বাস্থ্যশিবির, স্কুল সবেতেই শরৎ উপন্যাসের চরিত্রটির উজ্জ্বল উপস্থিতি৷ দেবদাসের স্মৃতিতেই গড়ে উঠেছে দেবদাস স্মৃতি সংঘ ও নানা প্রতিষ্ঠানের নাম। গ্রামের বাসিন্দা ও মেলা কমিটির দাবি, উপন্যাস অনুযায়ী পার্বতীর সঙ্গে দেখা করতে জীবনের অন্তিম লগ্নে হাতিপোতায় এসেছিলেন দেবদাস৷ কারণ উপন্যাসে লেখা ছিল পার্বতীর পরিবার তাকে বর্ধমান জেলার হাতিপোতা গ্রামে এক জমিদার বাড়িতে বিয়ে দিয়েছিল। যা ছিল হাতিপোতার জমিদার ভুবনমোহন চৌধুরির বাড়ি। সেই বাড়ির অস্থিত্বই নাকি এই গ্রামেই রয়েছে। পার্বতী এই বাড়িরই বধূ ছিলেন। আবার এই বাড়ির সামনেই নাকি ছিল একটি বটগাছ। দেবদাস এসে যেখানেই নিজের অন্তিম জীবন রেখেছিলেন। যার অস্থতিও নাকি রয়েছে।

উপন্যাসের লাইনেও লেখা আছে, ‘দেবদাস কহিল — গাড়োয়ান ভাই, হাতিপোতা আর কতদূর? গাড়োয়ান কহিল – সে বাবু, অনেকদূর৷ প্রায় ষোলো ক্রোশ রাস্তা, সময় লাগবে দুদিন।’ যা ধরেই এখানের বাসিন্দাদের দাবি, পান্ডুয়া থেকে সড়ক পথে হাতিপোতা আসতে এমনই দূরত্ব পার করতে হয়। তাছাড়া আর কোনও হাতিপোতা নামে গ্রামের অস্তিত্বও নেই। তাই তাঁদের নিশ্চিত বিশ্বাস, লেখক শরৎচন্দ্র নিজেই এই গ্রামে এসেছিলেন। সেখানেই ব্যর্থ প্রেমিক দেবদাসের কাহিনী জেনে নিজের উপন্যাস লিখেছেন। তাই হাতিপোতার বাসিন্দারা এই দেবদাসেই মজে। নতুন প্রজন্মও সেই মোহ থেকে বাইরে আসতে পারছেন না। এই মেলা কমিটির উদ্যোক্তা আরজেদ শেখ বলেন, ” আমরা নিশ্চিত লেখকের হাতিপোতা আমাদেরি গ্রাম। প্রবীণ মানুষরাও এ বিষয়ে নানা কাহিনি বলতেন। তাই আমরা এই অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছি “। রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, ” সমস্ত তথ্য প্রমাণ থেকেই আমরা নিশ্চিত। যা আমাদের কাছে খুবই গর্ভের। সাহিত্যপ্রেমী মানুষদের কাছে যা খুবই গুরুত্ব রাখে।” জানা গিয়েছে, এদিন অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেই ‘দেবদাসের’ নামে একটি স্মরণিকাও প্রকাশ করা হয়।

[অন্য রূপের গাছ, দৈবজ্ঞানে পূজার ছলে প্রকৃতির আরাধনা কেতুগ্রামে]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement