Advertisement
Advertisement

Breaking News

Teachers Day

নেই বোর্ড-স্লেট-পেনসিল, গ্রামের দেওয়ালেই অক্ষরশিক্ষা, ‘রাস্তার মাস্টার’কে কুর্নিশ!

দারিদ্রের অন্ধকারে শিক্ষার আলো এনেছেন দীপনারায়ণ নায়েক।

This man spreads the light of education among village children, known as 'Rastar Master' | Sangbad Pratidin
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:September 5, 2023 5:47 pm
  • Updated:September 5, 2023 5:47 pm  

শেখর চন্দ্র, আসানসোল: করোনার (Coronavirus) সময় জেরে ছিল স্কুল বন্ধ। তা’বলে পড়াশোনা বন্ধ থাকেনি। ‘দুয়ারে স্কুলে’র ব্যবস্থা করেছিলেন ‘রাস্তার মাস্টারমশাই’ দীপনারায়ণ নায়েক। সেখানেই চলছে আদিবাসী ও আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা (Education)। পাড়ার কাঁচা বাড়ি হোক বা মন্দির বা ভাঙা দেওয়াল গ্রাম জুড়েই স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জনবর্ণ বা নামতার আঁকিবুকি চোখে পড়বেই আসানসোলের জামুড়িয়া। শুধু পড়ুয়ারা নয়, নিরক্ষর অভিভাবকরাও (Gurdians) সেখানে পড়াশোনা করেন।

Advertisement

করোনা কালে স্কুলে শিক্ষকদের আনাগোনা কিংবা পড়ুয়াদের যাতায়াত ছিল না। পঠনপাঠন ছিল বন্ধ। কিন্তু রাস্তায় কিংবা পাড়ায় পাড়ায় বন্ধ হয়নি পড়াশোনা। একক উদ্যোগে আদিবাসী ও আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারের ছেলেমেয়েদের অক্ষর, শব্দ শিখিয়েছেন তিলকা মাঝি আদিবাসী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক (Teacher) দীপনারায়ণ নায়েক। গত দু’বছর ধরে রাস্তায় রাস্তায় তিনি পড়াশুনা করান বলে ‘রাস্তার মাস্টার’ বলে পরিচিতই হয়ে গিয়েছেন।

জামুড়িয়া ও আসানসোল (Asansol) দক্ষিণের আদিবাসী পাড়াতে গেলে চোখে পড়বে, কেউ বসে একমনে পড়ছে, কেউ লিখছে, কেউ ছবি আঁকছে। কিন্তু তাঁদের কারও কাছে বই নেই, নেই কোনও খাতা-পেন এমনকী নিজস্ব কোনও স্লেট-পেনসিল। তাহলে তারা লিখছে কীসে? প্রত্যেকেই লেখাপড়া করছে নিজেদের কাঁচা মাটির দেওয়ালে। যাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায়, বর্তমানে যাদের সামান্য পেন-খাতা কেনার সামর্থ্যটুকুও নেই। কিন্তু আছে ‘শিক্ষার অধিকার’। তাদেরকেই সেই অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য ‘রাস্তার মাস্টার’ তাদের কাঁচা বাড়ির ভগ্নপ্রায় দেওয়ালগুলিতে পাকা রং করে সেগুলিকে শিক্ষা সহায়ক উপকরণ হিসাবে ব্যবহার করেছেন। সুপরিকল্পিত উপায়ে তৈরি করেছেন বহু ব্ল্যাকবোর্ড। লিখেছেন বর্ণপরিচয়, অ্যালফাবেট থেকে শুরু করে করোনা থেকে বাঁচার উপায়, এমনকী ভ্যাকসিনের গুরুত্বের কথা একইসঙ্গে তিনি তুলে ধরেছেন।

[আরও পড়ুন: পাকিস্তানে ফের আক্রান্ত খ্রিস্টানরা! মসজিদের নির্দেশে চার্চে ভাঙচুর, পুড়ল বহু বাড়ি

এর ফলে একদিকে যেমন আদিবাসী (Tribal) সমাজের ছাত্রছাত্রীরা ‘দুয়ারে শিক্ষা’ বলুন বা ‘দুয়ারে স্কুল’ পাচ্ছে। অন্যদিকে, তেমনি আদিবাসী মানুষদের মধ্যেও শিক্ষা সচেতনতা গড়ে উঠছে। পাশাপাশি আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে যে সমস্ত কুসংস্কার আছে, সেগুলি দূর করার জন্য ‘বিজ্ঞান শিক্ষা প্রসারে’ বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছেন দীপনারায়ণবাবু। আদিবাসী ছাত্রছাত্রীদের ফুলের পরাগ থেকে শুরু করে ম্যালেরিয়ার জীবাণু অণুবীক্ষণ যন্ত্রের (Microscope) মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করান। ফলস্বরূপ ছাত্রছাত্রীরা বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে স্পষ্ট বুঝতে পারে, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু একটি জীবাণুঘটিত রোগ এটি কোন ‘ভূতে ধরা’ বা ‘দূষিত বাতাস’ ঘটিত রোগ নয়।

[আরও পড়ুন: সনাতন বিতর্কে উদয়নিধির শিরচ্ছেদের নিদান অযোধ্যার মহন্তের, ১০ কোটি পুরস্কার ঘোষণা]

ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী পায়েল মুর্মু, রিয়া টুডু ও তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী মন্দিরা ওরাং ‘দুয়ারে শিক্ষা’ পেয়ে অত্যন্ত খুশি। তারা বলছেন, “আমরা ১৮ মাসের বেশি সময় স্কুলে যাইনি কিন্তু স্যরের এখানে পড়লে মনে হয়, আমরা যেন স্কুলেই পড়াশোনা করছি, এখানে পড়তে বেশ ভাল লাগে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement