শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: বোধনেই বিসর্জন। শুরু হতে হতেই শেষ। একদিনেই দশভুজার আগমন এবং বিদায়। অকাল দুর্গাপুজো ঘিরে উৎসবে মাতোয়ারা জলপাইগুড়ির রংধামালির মহারাজঘাট এলাকা। দুর্গা এবং কালীপুজোর মাঝে এখানে উমার আরাধনা হয়। স্থানীয়দের কাছে এই দেবী বনদুর্গা নামেও পরিচিত।
[কালীপুজোয় দুঃস্বপ্নের স্মৃতি ফিরে আসে সাগিরা গ্রামে]
এমন অসময়ে কেন দুর্গাপুজোর আয়োজন? স্থানীয় বাসিন্দারা অবশ্য এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে একটু পিছনের দিকে হাঁটছেন। তাঁদের মতে প্রায় একশো বছর আগে পুজো শুরু হয়। সেই সময় জঙ্গলঘেরা এলাকার এই বাসিন্দারা ভিনরাজ্যে কাজের জন্য যেতেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাঁরা দুর্গাপুজোর পর বাড়ি ফিরতেন। আশ্বিন মাসের শেষে ফসল ওঠা উপলক্ষে তাঁদের প্রত্যাবর্তন হত। কিন্তু ততক্ষণে দুর্গাপুজো শেষ। মাতৃ আরাধনার সুযোগ হাতছাড়া যাতে না হয় তার জন্য দুর্গাপুজোর পর কৃষ্ণপক্ষের সপ্তমী তিথিতে হয় বিশেষ পুজার্চনা। সেদিনই হয় বিসর্জন। অল্প সময়ের সেই পুজো ঘিরে অকাল আনন্দে মেতে ওঠেন জলপাইগুড়ির রংধামালির মহারাজঘাট এলাকার বাসিন্দারা। মায়ের সঙ্গে পূজিতা হন কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী ও সরস্বতী। একদিনেই চারদিনের পুজোর সমস্ত নিয়ম মানা হয়।
[রাজ্যে পুজো শুরু হওয়ার আগেই বিসর্জন প্রতিমার, জানেন কেন?]
অনেকেই এই পুজোকে বনদুর্গা বলে থাকেন। জলপাইগুড়ি শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে এই মহারাজঘাট এলাকা। মহারাজঘাট থেকে খানিকটা দূরেই রয়েছে বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গল। জল-জঙ্গল ভরা এলাকা বলে দেবীকে বনদুর্গা বলা হয়। স্থানীয় বারোপেটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কৃষ্ণ দাস জানান, ‘‘অনেক দিন অসময়ে দেবী দুর্গার পুজো হয়ে আসছে। এটাই আমাদের কাছে বছরের সবথেকে বড় উৎসব। কয়েক পুরুষ ধরে এই পুজো চলে আসছে। পুজোর সময় গ্রামের যেসব বাসিন্দারা বাইরে থাকেন তাঁরাও চলে আসেন।’’ পুজো ঘিরে দু’দিনের মেলা বসেছে। জলপাইগুড়ির কৃষিজীবী প্রভাবিত এই এলাকার বাসিন্দারা এখন উৎসবের শেষে উৎসবের আনন্দে মশগুল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.