রাহুল চক্রবর্তী: এম, ই, এস, কিউ, আর, ইই- এই সাংকেতিক অক্ষরগুলিই এবার লেখা থাকবে ভোটার লিস্টে। কোনও ভোটার সংযোজন কিংবা বিয়োজনের তালিকায় পড়ছেন কি না, তা জানান দেবে এই সাংকেতিক চিহ্ন। নির্বাচন কমিশন এবারই প্রথম এই ব্যবস্থা করেছে।
[ভোটের আগে টাকার পাহাড়, শহরে কড়া নজর রাখছেন গোয়েন্দারা]
বিভিন্ন সময় অভিযোগ উঠেছে, মৃত ব্যক্তির ভোট পড়ে গিয়েছে। কিংবা যে ব্যক্তি দীর্ঘদিন এলাকায় নেই, তার ভোট অন্য কেউ দিয়ে দিয়েছে। এই অবস্থায় নির্বাচন স্বচ্ছ করতে একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছে কমিশন। যে যার ভোট যাতে নিজে দিতে পারেন, সেটা সুনিশ্চিত করার জন্য বিশেষ পদক্ষেপও গ্রহণ করা হয়েছে। কোনও ভোটারের বর্তমান অবস্থান জানাতে ভোটার তালিকায় বেশ কয়েকটি সাংকেতিক অক্ষর দেওয়া হয়েছে। ভোটারের নামের পাশে ওই অক্ষর দেখতে পাওয়া যাবে।
সাধারণত ভোটার লিস্টের একেবারে উপরে লেখা থাকে, বিধানসভা নির্বাচনক্ষেত্রের নাম, নং ও সংরক্ষণ স্থিতি। যেমন– ১১০, দমদম উত্তর, সাধারণ। সেইসঙ্গে উল্লেখ থাকে অংশের নম্বর। ভোটারের বসবাসস্থানের নাম, থানা, পঞ্চায়েত কিংবা পুরসভা, মহকুমা, জেলার, ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের বিস্তারিত তথ্য ভোটার লিস্টের শুরুতেই উল্লেখ থাকে। এরপরই থাকে সংযোজন ও বিয়োজনের তালিকা। এবার সেখানেই বেশ কয়েকটি সাংকেতিক অক্ষর যুক্ত করেছে নির্বাচন কমিশন। তাতে লেখা আছে, ‘এম’- মিসিং বা নিখোঁজ। ‘ই’-এক্সপায়ার্ড বা মৃত। ‘এস’-শিফটেড বা স্থান পরিবর্তন। ‘কিউ’-ডিসকোয়ালিফাইড বা অকৃতকার্য। ‘আর’-রিপিটেড বা পুনরাবৃত্ত। নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এই সাংকেতিক অক্ষরের ফলে সহজেই বোঝা যাবে, ভোটারের বর্তমান অবস্থান কী। দীর্ঘদিন এলাকায় না থাকলে, ভোটারের নামের পাশে এম বা মিসিং অক্ষর দেওয়া থাকবে। আবার ভোটার মৃত কি না, সহজেই বোঝা যাবে ‘ই’ অক্ষরের দ্বারা। এক্ষেত্রে আবার দুটি ভাগ আছে। কমিশনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “চলতি বছরের ১৪ তারিখ যে ভোটার লিস্ট প্রকাশিত হয়েছে, তার আগে মারা গিয়ে থাকলে নামের পাশে ‘ই’ লেখা থাকবে। আবার ১৪-১-১৯ থেকে ১০-৩-১৯ মধ্যে কোনও ভোটার মারা গেলে, তাঁর নামের পাশে ‘ডবল ই’ লেখা থাকবে।”
তেমনই যে সমস্ত ভোটার নাম অন্যত্র পরিবর্তন করেছেন, সংযোজন-বিয়োজন তালিকায় তাঁদের নামের পাশে লেখা থাকবে ‘এস’ অর্থাৎ শিফলেড। এক্ষেত্রে সাধারণত মহিলা ভোটারদেরই সংখ্যা বেশি। কারণ, বিয়ের পর তারা নাম অন্যত্র পরিবর্তন করে থাকেন। আবার একই ব্যক্তির নাম দু’বার ভোটার লিস্টে আছে কি না, তা সহজেই জানান দেবে ‘আর’ অক্ষর। যাতে বুথে বসা কমিশনের আধিকারিকরা বুঝতে পারবেন ওই ভোটারের নাম ‘রিপিটেড’ বা দু’বার আছে। তথ্য সংক্রান্ত কোনও ত্রুটির জন্য ভোটার ডিসকোয়ালিফায়েড বা অযোগ্য তা বোঝা যাবে ‘কিউ’ অক্ষর দ্বারা।
কেন এমন ব্যবস্থা? নির্বাচন কমিশনের এক কর্তা জানিয়েছেন, “সাংকেতিক অক্ষরগুলির ফলে যার ভোট তিনি দিচ্ছেন কি না, তা সহজেই বোঝা যাবে। আবার এই লিস্ট বুথে বসা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এজেন্টদের কাছেও থাকবে। ফলে কোনও দল কারচুপির চেষ্টা করলে, অন্যজন তা সহজেই ধরে ফেলে প্রতিবাদ জানানোর সুযোগ পাবেন।” তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচন কমিশনের এই উদ্যোগ তখনই সফল হবে, যখন ভোটের দিন সকলেই নিজের ভোট নিজে দিতে পারবেন।
[জনগণের কাজ যেন বন্ধ না হয়, কমিশনের কাছে আরজি জানাবেন মুখ্যমন্ত্রী]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.