ছবি: প্রতীকী
সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: মদ্যপ বাবার হাতে মারধরের ঘটনায় পরপর দুই সন্তানের পর আরও এক মেয়ের মৃত্যু হল। সোমবার রাতে ঝাড়খণ্ডের রাঁচিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় অর্পিতা মাহাতো (৮)। তার বাড়ি পুরুলিয়া মফস্বল থানার ডিগশিলি গ্রামে।
গত শুক্রবার রাতে আকণ্ঠ মদ পান করে বাড়ি ফিরেছিলেন চাষাবাদের কাজ করা বাবা প্রভাস মাহাতো। স্ত্রী ওই মদ খাওয়ার প্রতিবাদ করলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তুমুল ঝামেলা বাঁধে। ওই ঝামেলার জেরে স্ত্রী শ্যামলা মাহাতো ঘর থেকে বেরিয়ে যান। তারপরই মদ্যপ বাবার ক্ষোভ আছড়ে পড়ে তার ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের উপর। চার সন্তানকে ওই ‘গুণধর’ বাবা লাঠিপেটা করে বলে অভিযোগ। মাটিতে ফেলে আছাড়ও মারে। তারপরেই সে ঘর থেকে পালিয়ে যায়। ওই রাতেই এলাকার বাসিন্দা-সহ পুলিশ মিলে ওই জখম চার সন্তানকে পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভরতি করলে সাত বছরের মেয়ে মধুমিতা মাহাতোকে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করে। বাকি তিন সন্তানের শারীরিক অবস্থা গুরুতর থাকলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদেরকে রেফার করে দেয়।
পরে তাদের আত্মীয়রা ওই শিশুদেরকে ঝাড়খণ্ডের একটি হাসপাতালে ভরতি করে। সেখানেই শনিবার রাতের দিকে জয়দেব মাহাতো(৩)-র মৃত্যু হয়। এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে একমাত্র সন্তান পাঁচ বছরের আশা মাহাতো। টামনা থানার পুলিশ জানিয়েছে, তার মা শ্যামলা মাহাতোর খোঁজ মিলেছে। সে ঝাড়খণ্ডের রাঁচির ওই হাসপাতালেই বেঁচে থাকা একমাত্র সন্তানের সঙ্গে রয়েছেন । ওই মদ্যপ বাবার অত্যাচারে একের পর এক শিশুর মৃত্যুতে এলাকার মানুষজন তার ‘ফাঁসি’-র দাবি করছেন। ওই ‘গুণধর’ বাবা এখনও পলাতক। তার খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে টামনা থানার পুলিশ।
ওই মদ্যপ বাবা কেন এমন আচরণ করল তা নিয়ে ধন্দে টামনা থানার পুলিশ। মোটিভ কি তা এখনও কিছুই বুঝতে পারেনি। তবে স্থানীয় সূত্রে পুলিশ জানতে পেরেছে স্বামী- স্ত্রীর মধ্যে মাঝে মধ্যেই ঝামেলা বাঁধত। তবে গত শুক্রবার রাতে যে আকার নিয়েছিল তা কোনদিনও হয়নি। ফলে সব কিছু খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.