নিজস্ব সংবাদদাতা, বনগাঁ: স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে ওষুধ চুরি! কলিকালে এমন ঘটনা কেউ শুনেছে কিনা সন্দেহ। কিন্তু বনগাঁর যশোর রোডের পাশে পৌরসভার একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রবিবার রাতে এমনই ঘটনা ঘটেছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের তালা ভেঙে ওষুধ নিয়ে পালিয়েছে চোর। এমন ঘটনায় অবাক এলাকাবাসী থেকে পুলিশকর্মী, সবাই। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীরাও বলছেন, এমন ঘটনা তাঁরা আগে কখনও দেখেননি।
ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁ শিকদারপল্লী ২২ নম্বর ওয়ার্ডের ৪ নম্বর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সোমবার সকালে প্রতিদিনের মতো স্বাস্থ্যকেন্দ্রের তালা খুলতে এসে এক মহিলা ঘটনাটি দেখতে পান। তিনি দেখেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তালা ভাঙা। ভিতরে ঢুকে দেখেন যত্রতত্র ছড়িয়ে রয়েছে ওষুধ। আলমারির তালা ভাঙা। সেখান থেকে ওষুধের বেশ কিছু শিশি ও ট্যাবলেটের পাতা উধাও। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় পৌরকর্তা ও পুলিশকে। ঘটনাস্থলে আসেন তাঁরা। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সুপরাভাইজার কবিতা মণ্ডল বলেন, “১৩ বছর ধরে এখানে চাকরি করছি। ওষুধ চুরির ঘটনা এই প্রথম ঘটল। তালা ভেঙে ওষুধ চুরি আগে কখনও ঘটেনি।”
উল্লেখ্য, বনগাঁর এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে পৌরসভার মহিলাদের স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া হয়। শিশুদের ভ্যাকসিন ও প্রসূতিদের চিকিৎসাও হয় এই হাসপাতালে। সোমবার সকালে এমন ঘটনায় হতবাক চিকিৎসা করাতে আসা গর্ভবতী মহিলারা। এছাড়া এখানে ডেঙ্গু মোকাবিলার ওষুধও থাকে। তবে ঠিক কী কী ওষুধ রবিবার রাতে খোয়া গিয়েছে, তা নিয়ে এখনও স্পষ্ট কোনও উক্তি করতে নারাজ কর্তৃপক্ষ। এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, তিনি হিসেব নিকেশ শুরু করেছেন। তারপরই তিনি বিস্তারিত জানাতে পারবেন।
তবে শুধু স্বাস্থ্যকেন্দ্রই নয়। রবিবার রাতে দুষ্কৃতীরা তালা ভাঙে পাশের একটি উচ্চমাধ্যমিক স্কুলেও। নাম যোগেন্দ্রনাথ বিদ্যাপীঠ উচ্চ বিদ্যালয়। সেখানে রবিবার রাতেই তালা ভেঙে লুটপাট চালায় দুষ্কৃতীরা। হাতানো হয় গুরুত্বপূর্ণ নথি ও টাকাপয়সা। সোমবার সকালে স্কুলকর্মী কাঞ্চন বিশ্বাস স্কুলের তালা খুলতে এসে গোটা ব্যাপারটা দেখতে পান। তিনি বলেন, আলমারির কাগজপত্র লন্ডভণ্ড করেছে দুষ্কৃতীরা। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা খুচরো টাকা রাখেন ড্রয়ারে। সেগুলি ভেঙে টাকাপয়সা হাতিয়ে নেয় তারা। প্রধান শিক্ষকের ঘরেও তালা ভাঙার চেষ্টা করে। ঘরের বাইরে লোহার রড পড়ে থাকতে দেখে তিনি বিষয়টি বুঝতে পারেন। কিন্তু চেষ্টা ফলপ্রসূ হয়নি। স্কুলে বেশি টাকা ছিল না। তাই খুব বেশি টাকা চুরি করতে পারেনি দুষ্কৃতীরা। তবে কী কী খোয়া গিয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বনগাঁ থানার পুলিশ।
এক রাতের মধ্যেই জোড়া চুরির ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। স্থানীয় এক যুবকের মতে, পৌরসভা সংলগ্ন যে এলাকাটিতে চুরি হয়েছে, সেটি জনবহুল। রাতভর আলো জ্বলে। টহল দেয় পুলিশও। তাদের নাকের ডগা দিয়ে তালা ভেঙে কীভাবে লুট চালাল দুষ্কৃতীরা? এমন এলাকায় যদি চুরি হতে পারে, তাহলে তাঁরা তো একেবারেই সুরক্ষিত নন। রাতবিরেতে যখন তখন তাঁদের বাড়িতেও হামলা চালাতে পারে দুষ্কৃতীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.