Advertisement
Advertisement
Love Marriage

‘এখন আমরা স্বামী-স্ত্রী’, ১৮ বছর পেরতেই ‘প্রেমিকা’র হাত ধরে বাড়ি ছেড়ে বিয়ে তরুণীর!

শাঁখা-সিঁদুর পরে দিব্যি সংসার করছেন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী।

These women just after 18 years defy society, tie knot in Katwa, East Burdwan | Sangbad Pratidin
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:June 10, 2022 5:41 pm
  • Updated:June 10, 2022 5:45 pm  

ধীমান রায়, কাটোয়া: মনের মধ্যে অনুভূতিটা ছিল বহুদিন ধরেই। সমাজের বিপরীত স্রোতে পাড়ি দেওয়ার সাহসও ছিল। ছিল সতর্কতাও। আইনি বাধায় কোনওভাবে যাতে না পড়তে হয়, তাই অপেক্ষা করেছিলেন দুই বান্ধবী। আঠারো বছর পেরতেই বাড়ি থেকে পালিয়ে বছর একুশের ‘প্রেমিকা’র কাছে পালিয়ে গেলেন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। শুক্রবার তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে গিয়েছিলেন পরিবারের লোকজন। কিন্তু আঠারো উত্তীর্ণ শাঁখা-সিঁদুরে পরিহিত তরুণীর সাফ জবাব, “আমরা বিয়ে করেছি। এখন আমরা স্বামী-স্ত্রী। এবার থেকে শ্বশুরবাড়িতেই থাকব।”

পূর্ব বর্ধমান (East Burdwan) জেলার মঙ্গলকোটের মাথরুন গ্রামের বাসিন্দা রিক্তা মাজি (নাম পরিবর্তিত)। মাথরুন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল। এ বছর উচ্চমাধ্যমিক (Higher Secondary) পরীক্ষা দিয়েছিল। তার বাবা এক প্রান্তিক কৃষক। এক ভাই, এক বোনের সঙ্গে বেড়ে উঠেছে রিক্তা। পরিবার সূত্রে জানা যায়, সপ্তাহ খানেক আগে হঠাৎ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় সে। পরিবারের পক্ষ থেকে নিখোঁজ ডায়রি করা হয়েছিল। পরে পুলিশ খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারে, মেয়েটি বর্ধমান শহরের এক জায়গায় রয়েছে। আরও জানা যায়, মঙ্গলকোটের (Mangalkot) কাশেমনগর গ্রামের বাসিন্দা বছর একুশের তরুণীর সঙ্গেই রিক্তা পালিয়ে গিয়ে বর্ধমান শহরের এক ঘরভাড়া করে রয়েছে।

Advertisement

পরিবারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে পুলিশের সাহায্য চাওয়া হয়েছে বলে দু’জনকেই উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। তারপর মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই তরুণী জানান, কাশেমনগরের চামেলিকে বিয়ে করেছেন তিনি। যেহেতু দু’জনেই প্রাপ্তবয়স্কা, তাই পুলিশ তাদের মতামত শুনে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। রিক্তা এরপর চামেলির বাড়ি কাশেমনগরে চলে যায়। তারা দু’জন এখন ‘স্বামী-স্ত্রী’ (Husband-Wife) পরিচয় দিয়েই সেখানে রয়েছেন। এদিন রিক্তার মামা বলেন, “মাস ছয়েক আগেও আমার ভাগনি বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। তখনও কাশেমনগরের ওই মেয়েটির সঙ্গেই পালায়। তখন যেহেতু ১৮ বছর পূর্ণ হয়নি, তাই বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে পেরেছিলাম। ওরা দু’জন কেউ কাউকেই ছাড়ছে না। আর আইনত কিছু করতেও পারব না। তাই ফিরে এসেছি। ভাগনি আর বাড়ি ফিরবে না বলে দিয়েছে।” রিক্তার মামা জানান সপ্তাহদুয়েক আগে রিক্তার আঠারো বছর পূর্ণ হয়েছে। তারপরই সে বাড়ি থেকে পালিয়ে ‘বান্ধবী’কে বিয়ে করেছে।

[আরও পড়ুন: ইসলাম বিরোধী মন্তব্যের জের, বিশ্বকাপে ভারতীয়দের প্রবেশে এখনই অনুমতি দিতে নারাজ কাতার]

এদিকে, কাশেমনগরের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, চামেলিকে তাঁরা কোনওদিন মেয়েদের পোশাক পড়তে দেখেননি। প্যান্ট-শার্ট পরে থাকেন। একজন পুরুষের মতনই তার চালচলন। স্থানীয় বাসিন্দা মঙ্গলকোট পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ বুদ্ধদেব ভারুই বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। মাথরুনের ওই মেয়েটির পরিবার আমাদের কাছে এসেছিল। তবে এটা আইনি বিষয়। তাই আমরা হস্তক্ষেপ করিনি।”

[আরও পড়ুন: দিনেদুপুরে পার্কসার্কাসে এলোপাথাড়ি গুলি, আত্মঘাতী পুলিশ কর্মী, মৃত্যু আরও একজনের]

পরিবার সূত্রে জানা যায়, রিক্তার এক তুতো দিদির বিয়ে হয়েছে কাশেমনগরে। দিদির বাড়িতে যাতায়াতের সূত্রেই কয়েকবছর ধরে তার সঙ্গে চামেলির সঙ্গে পরিচয় হয়। দু’জনের মধ্যে অন্তরঙ্গতা দেখলেও পরিবারের লোকজন তখন তেমন কিছু ভাবেননি। কারন, দু’জনেই কন্যা। কিন্তু তলে তলে দু’জনের মধ্যে অন্তরঙ্গতা একেবারে বিয়ের পিঁড়িতে নিয়ে গিয়ে তুলবে, এটা ভেবে হতবাক স্থানীয়রাও। এদিন উচ্চমাধ্যমিকের ফলঘোষণার পরেও যদিও ফলাফল জানার বিষয়ে কোনও আগ্রহ দেখায়নি রিক্তা।  বরং বলছে, “এবার থেকে আমাদের নিজেদের মতন থাকতে দেওয়া হোক।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement