বিক্রম রায় কোচবিহার: টেবিলের উপর সারি সারি গ্লাসে ‘চিত্তাকর্ষক’ পানীয়। যেখানে সেখানে পড়ে রয়েছে নামী ব্র্যান্ডের অ্যালকোহল। কোথাও ফিশ ফ্রাই তো কোথাও অন্য কোনও স্ন্যাক্স, কোথাও আবার তাসের বান্ডিল, সিগারেটের প্যাকেট। এক ঝটকায় দেখলে মনে হতে পারে, কোনও নাইট ক্লাবে চলে এসেছেন। কিন্তু এই নিম্নরুচির ছবি অন্য কোথাও নয় দেখা গেল সরকারি কলেজের অফিস ঘরে। পুরো ঘটনায় রীতিমতো হতবাক তুফানগঞ্জবাসী।
মূল ঘটনা তুফানগঞ্জ আইটিআই কলেজের। মদ্যপানের আসরে খোদ অধ্যক্ষ ও তাঁর সহকর্মীরা। অধ্যক্ষ উইলিয়াম সোরেন এদিন দুপুরে নিজের ঘরেই মদ্যপানের আসর বসিয়েছিলেন সহকারী শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মচারীদের নিয়ে। এই সময় কলেজে ভরতির ফর্ম তুলতে আসেন তুফানগঞ্জ এমএনএম হাই স্কুলের দশম শ্রেণির ৪ ছাত্র। তারা কারিগরী বিভাগে ভরতি হওয়ার জন্য ফর্ম তুলতে গিয়েছিল। কলেজের অফিস ঘরে ঢুকতেই তাদের চক্ষু চড়কগাছ। কলেজের অফিস ঘরে এ কী কাণ্ড চলছে দেখে বিশ্বাসই করতে পারছিল না ওই ছাত্ররা। তারা ফর্ম তো পায়ইনি উলটে ২ ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করতে হয় ওই পড়ুয়াদের।
শেষে অধৈর্য্য হয়ে পাশের তুফানগঞ্জ কলেজের ছাত্র সংসদের দুই যুগ্ম সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন এবং শুভম শংকরের কাছে অভিযোগ করে ওই চার পড়ুয়া। ঘটনার কথা জানতে পেরে সদলবলে আইটিআই কলেজ যায় তুফানগঞ্জ কলেজের ছাত্র নেতারা। কিন্তু তাদের সামনেও মদ্যপানে বিরাম নেই গুণধর অধ্যক্ষের। তিনি সদর্পে ঘোষণা করেন মদ তাঁর নিত্যদিনের সঙ্গী। খাবারের মেনুতে নাকি মদ ছাড়া চলে না। যতক্ষণ চোখ খোলা থাকে ততক্ষণ নাকি তাঁকে মদ্যপান করতে হয়। এমনকী পাশের কলেজের ছাত্রদেরও মদ্যপানের প্রস্তাব দেন অধ্যক্ষ উইলিয়াম সোরেন। এই ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা। তাঁরা বেশ কিছুক্ষণ অধ্যক্ষকে ঘিরে রাখেন। যত শীঘ্র সম্ভব ওই প্রিন্সিপালের অপসারণ চাইছে পড়ুয়ারা।এ বিষয়ে জেলাশাসক কৌশিক সাহা জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এই ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। কেন তিনি এই ধরনের আচরণ করলেন তা জানতে চেয়ে তাঁকে শোকজ করা হবে।
ভিডিও সৌজন্য: দেবাশিস বিশ্বাস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.