বিপ্লবচন্দ্র দত্ত ও পলাশ পাত্র: মাধ্যমিকে আশানুরূপ ফল হয়নি৷ আর সেটাই জেদ বাড়িয়ে দিয়েছিল৷ সেই জেদেরই ফল হাতেনাতে পেল নদিয়ার কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট হাইস্কুলের ছাত্র অত্রি বিশ্বাস৷ এবারের উচ্চমাধ্যমিকে যুগ্মভাবে ষষ্ঠ স্থান দখল করেছে সে৷ তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৯০৷ একই স্কুল থেকে ৪৯৬ নম্বর পেয়ে মেধাতালিকায় দ্বিতীয় স্থানে যুগ্মভাবে ঠাঁই করে নিয়েছে অত্রির সহপাঠী ঋতম নাথ৷
কৃষ্ণনগর রাজদিঘির বাসিন্দা ঋতম নাথ দু’বছর আগে মাধ্যমিকে অষ্টম হয়েছিল৷ মেধাতালিকার এতটা পিছনে চলে যাওয়ায় তখন থেকেই তার লক্ষ্য ছিল, উচ্চমাধ্যমিকে আরও ভাল ফল করতে হবে৷ সেইমতো শুরু হয় প্রস্তুতি৷ যার ফল মিলল সোমবার, উচ্চমাধ্যমিকের ফলপ্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে৷ দেখা গেল, যুগ্মভাবে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুলের ঋতম নাথ৷ তবে সোমবার তাকে বাড়িতে বা স্কুলে পাওয়া যায়নি৷ কারণ, আজ আবার আইআইটি এন্ট্রান্স পরীক্ষা৷ সেই পরীক্ষা দিতে ঋতম কল্যাণীতে গিয়েছে৷ সন্ধের আগে তাকে বাড়িতে পাওয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন অভিভাবকরা৷ মা মৌসুমী নাথ এবং বাবা পার্থ নাথ স্বভাবতই ছেলের এই সাফল্যে বেশ খুশি৷ তাঁরা জানিয়েছেন, ঋতম আইআইটিতেই পড়তে চায়৷
ঋতমের সহপাঠী নদিয়ার অত্রি বিশ্বাসের নামও মেধাতালিকায় জ্বলজ্বল করছে৷ নম্বর পেয়ে ষষ্ঠ স্থানে থাকা অত্রির সাফল্যের পিছনেও রয়েছে অদম্য জেদ৷ ২ নম্বরের জন্য মাধ্যমিকের মেধাতালিকা থেকে ছিটকে গিয়েছিল৷ সেই আক্ষেপ মেটাতেই এবার আরও বেশি করে মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা শুরু করে সে৷ দিনে অন্তত দশ থেকে বারো ঘন্টা পড়াশোনা করত অত্রি। ছিল ৯জন শিক্ষক৷ কৃষ্ণনগরের কাঁঠালপোতা সুকান্ত পল্লির বাসিন্দা অত্রি বিশ্বাসের বাবা নিজে একজন শিক্ষক। তিনি বীরনগর হাইস্কুলে শিক্ষকতা করেন। তাঁর কথায়, ‘আমার ছেলে অন্তত দিনে দশ থেকে বারো ঘন্টা পড়াশোনা করত। ভাল রেজাল্ট করবে, এমন একটা আশা ছিল। কিন্তু মেধাতালিকার এতটা উপরে স্থান পাবে, ভাবিনি। ছেলের বাংলা ও ইংরেজিতে একজন করে গৃহশিক্ষক ছিলেন। এছাড়া অন্য বিষয়ে দু’জন করে শিক্ষক ছিল। যদিও ওকে পড়াশোনার জন্য আমাদের সাহায্য করার দরকার হয়নি।’ অত্রি আগামী দিনে ডাক্তার হতে চায়৷ মা,বাবারও তাতে পূর্ণ সমর্থন রয়েছে৷ পড়াশোনার মাঝে অবসর সময় পেলে মোবাইলে গেম খেলা ছাড়া, গল্পের বই পড়া বা মাঝেমধ্যে সিনেমা দেখার অভ্যাস রয়েছে অত্রির৷ এখন ডাক্তারিতে ভরতির অপেক্ষায় সে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.