ছবি: জয়ন্ত দাস।
ধীমান রায়, কাটোয়া: তিন গোমাতাকে নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন ভাতারের ভোলানাথ৷ হঠাৎ একদিন ঝড়জলের রাতে ভোলানাথের ভিটেয় আগমন দু’টি গাভী ও একটি বকনা বাছুরের৷ সাময়িক তাদের আশ্রয়ও দিয়েছিলেন৷ ভোলানাথ ভেবেছিলেন বৃষ্টি থামলেই তারা গন্তব্যে চলে যাবে৷ কিন্তু যায়নি৷ বরং আস্তানা গেড়েছে ওই তিন গরু৷ প্রায় দেড় মাস ধরে ভাতারের কাপশোর গ্রামে ভোলানাথ মেটের গোয়ালে দিব্যি রয়েছে তিন অতিথি। ভোলানাথবাবু সেদিন থেকেই খোঁজ চালিয়ে যাচ্ছেন, তাদের মালিকের। কিন্তু এখনও কোনও দাবিদারকে পাওয়া না পওয়ায় বেশ খানিকটা হতাশ তিনি৷ এদিকে তিনটি গরুর খোরাকি জোটাতে কার্যত হিমশিম অবস্থা ভোলানাথবাবুর।
কাপশোর গ্রামের বাসিন্দা ভোলানাথ মেটে পেশায় প্রান্তিক কৃষক। গোপালনও করেন। তিনি জানিয়েছেন, মাস দেড়েক আগে এই তিনটি গরু একদিন তার গোয়ালের সামনে চলে আসে। তখন ঝড়বৃষ্টি হচ্ছিল। গোয়ালের চালায় তিনটি গরু আশ্রয় নেয়। তারপর বিকেলের পর বৃষ্টি থামলেও তারা যায়নি। ভোলানাথ বলেন, ‘‘আমি ভেবেছিলাম পরেরদিন হয়তো চলে যাবে। কিন্তু গরুগুলি আর গোয়াল ছেড়ে যায়নি। গরুর মালিককেও পাওয়া যায়নি।’’ ভোলানাথ রোজ নিজের হাতে বিচালি কেটে গরুগুলি খাওয়াচ্ছেন।
বামুনাড়া পঞ্চায়েতের প্রধান মনোয়ার ইসলাম শেখ বলেন, ‘‘ভোলানাথ দেড় মাস ধরেই গরুগুলির মালিককে খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছেন। বিভিন্নজনকে বলেছেন। আমাকেও বলেছেন। আমি পঞ্চায়েতের সকলকে জানিয়েছি কেউ দাবিদার থাকলে প্রমাণ দিয়ে নিয়ে যাবেন।’’
এদিন বৃহস্পতিবার ভোলানাথবাবুর গোয়ালে বহাল তবিয়তে তিন গরু ডাবায় মুখ ভরে বিচালি খাচ্ছে। ছবি তোলার চেষ্টা করতেই বাধা দেন ভোলানাথবাবু। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘আমার ছবি তুলবেন তো তুলুন। কিন্তু গরুগুলির ছবি তোলা যাবে না৷’’ কেন? ভোলানাথবাবুর বুদ্ধিদীপ্ত উত্তর, ‘‘গরুগুলির রঙ সবাই জেনে ফেললে অনেকেই এসে মিথ্যা করে তাদের গরু বলে দাবি করবে। তাই গরুগুলিকে লুকিয়ে রেখে জানা হবে এদের প্রকৃত মালিককে।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.