বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: দাহ্য পদার্থে তৈরি ঝুপড়ি। সেখানেই চলছে গ্যাস জ্বেলে চলে রান্না। অথচ অগ্নিনির্বাপণের উপযুক্ত কোনও ব্যবস্থা নেই। সোমবারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর থেকেই এইএমস কর্তৃপক্ষের দিকে আঙুল উঠতে শুরু করেছে। এদিকে গোটা ঘটনায় এলাকায় আতঙ্কের ছায়া। আশপাশের ঝুপড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন অনেক বাসিন্দাই। প্রসঙ্গত, সোমবার বিধ্বংসী আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যায় কল্যাণীর এইমসের নির্মাণকর্মীদের অস্থায়ী আবাসের ২০০টি ঘর। জখম হয়েছেন তিন নির্মাণকর্মী। কীভাবে আগুন লেগেছে, তার কারণ নিয়ে এখনও নিশ্চিত নয়।
কল্যাণী থানার বসন্তপুরে এইমসের যে নির্মাণকাজ চলছে, সেখানে এইমসের জমিতে বেড়া, প্লাস্টিক জাতীয় দাহ্য পদার্থ দিয়ে তৈরি ঝুপড়ির মতো ঘরে দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছেন নির্মাণ কর্মীরা। অনেকেই রয়েছেন পরিবার নিয়ে। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে রান্না সেরে তাঁরা নির্মাণের কাজে যান। অন্যান্য দিনের মতো সোমবার সকালে ঝুপড়ির বাসিন্দারা রান্নার কাজ করছিলেন। সেইসময় আচমকাই কোনওভাবে আগুন লেগে যায়। মুহূর্তের মধ্যেই একের পর এক ঘর দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে। আগুন থেকে ঝুপড়ির বাসিন্দারা পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করেন। যদিও তিনজন নির্মাণ কর্মী আহত হন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান এইমসের আধিকারিকরা। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দমকলের ইঞ্জিন।
কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। প্রাথমিক তদন্তে এইমস কর্তৃপক্ষ ও দমকলকর্মীদের ধারণা, বাসিন্দারা ঝুপড়ির মধ্যে রান্না করার সময় সম্ভবত ফেটে যায় কোনও গ্যাসের সিলিন্ডার। তাতেই মুহূর্তের মধ্যে আগুন লেগে যায়। প্লাস্টিক, বেড়া দেওয়া ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়তে বিন্দুমাত্র সময় লাগেনি।
কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে মাইকে অন্যান্য ঝুপড়ি ঘরের বাসিন্দাদের সতর্ক করে দেওয়া হয়। যদিও এইমসের মতো প্রকল্পের কাজের সঙ্গে যুক্ত নির্মাণ কর্মীদের কেন দাহ্য পদার্থ দিয়ে তৈরি ঝুপড়ির মধ্যে থাকতে হয়, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অনেকেরই বক্তব্য, বেড়া দিয়ে ঘেরা ওই ঘরগুলিতে সামান্য বিড়ির আগুনেই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়। অথচ দীর্ঘদিন ধরে নির্মাণকর্মীদের থাকার জন্য কেন অস্থায়ী পাকা ঘরের ব্যবস্থা করা হয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। ওই ঘটনায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে কর্মীদের মধ্যে। নির্মাণকর্মীদের কাছে থেকে জানা গিয়েছে, কোনও অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নেই সেখানে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.