শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: ধূপগুড়ির নবনির্বাচিত বিধায়কের শপথগ্রহণ নিয়ে এখনও অব্যাহত জটিলতা। রাজভবন থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি বলেই দাবি তৃণমূল বিধায়ক নির্মলচন্দ্র রায়ের। কানাঘুষো শোনা গিয়েছিল, বিধানসভাকে অন্ধকারে রেখে রাজভবনে শপথের সিদ্ধান্তের কথা তাঁকে জানানো হয়। রাজ্যপাল ফের এক্তিয়ার বহির্ভূত কাজ করেছেন বলেই দাবি পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের।
কবে তৃণমূলে টিকিটে জয়ী ধূপগুড়ির নবনির্বাচিত বিধায়ক নির্মলচন্দ্র রায়ের শপথ নেবেন, তা নিয়ে শুক্রবার দিনভর চলে টানাপোড়েন। রাতে জানানো হয় শনিবার রাজভবনেই হবে তাঁর শপথ। শোনা যায়, রাজভবন থেকে নাকি এই মর্মে তাঁকে ফোনও করা হয়। রাজভবনে এসে শপথ নিতে তাঁর কোনও অসুবিধা আছে কি না তাও জানতে চাওয়া হয়। রাজভবন সূত্রে পাওয়া এই খবর নিয়ে নানা মহলে শুরু হয় জোর চর্চা। কেন বিধানসভাকে এড়িয়ে এমন পদক্ষেপ, তা নিয়ে বিতর্ক মাথাচাড়া দেয়।
এই টানাপোড়েনের মাঝে বিস্ফোর নির্মলচন্দ্র রায়। নবনির্বাচিত বিধায়ক তথা ধূপগুড়ি মহিলা বিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক এদিন কলেজে যান। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান নিয়ে মুখ খোলেন। সাংবাদিকদের উত্তরে বলেন, “রাজভবন থেকে কেউ যোগাযোগ করেননি। তাই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যাওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই।” তবে শপথ গ্রহণ নিয়ে জটিলতায় এলাকার কোনও কাজ করতে পারছেন না বলে ক্ষোভপ্রকাশ করেন। যাঁদের ভোটে জয়ী হয়েছেন, তাঁরা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হোন, তা চান না নবনির্বাচিত বিধায়ক। সুতরাং ধূপগুড়ির নবনির্বাচিত বিধায়কের শপথ নিয়ে জটিলতা এখনও কাটল না।
এদিকে, পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ও রাজ্যপালের ‘অতি সক্রিয়তা’র তীব্র বিরোধিতা করেন। তাঁর দাবি, “বিরল ঘটনা ঘটাতে চাইছেন রাজ্যপাল। শনিবার বিধানসভা খুলে শপথবাক্য পাঠ করাতে চান তিনি। এখানেও না থেমে সরাসরি তিনি প্রার্থীকে ফোন করছেন। এটা অত্যন্ত নিম্নমানের ঘটনা। রাজ্যপাল সাংবিধানিক পদে থাকা ব্যক্তি। তিনি অপর একটি সাংবিধানিক পদে থাকা ব্যক্তিকে অসম্মান করছেন। এটা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরোধী। ধূপগুড়ির বিধায়ক ফোন ধরেনি বলে আমি শুনেছি। পরিষদীয় মন্ত্রীকে এখনও ফাইল পাঠানো হয়নি। পরিষ্কার জানিয়ে দিচ্ছি আজ শপথ হবে না। আমাকে আবার চিঠি লিখতে হবে।” শপথ নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত যে আরও চরমে পৌঁছল, তা বলাই বাহুল্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.