ছবি: প্রতীকী
শঙ্কর রায়, বালুরঘাট: তৃতীয় স্ত্রীকে পিটিয়ে রাস্তায় আধমরা করে মেরে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ আবগারি দপ্তরের আধিকারিকের বিরুদ্ধে৷ পরে রক্তাক্ত অবস্থায় ওই গৃহবধূকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরই মৃত্যু হয়৷ বালুরঘাট থানার পতিরামের নিচাবন্দর এলাকার ঘটনায় তীব্র আতঙ্ক তৈরি হয়েছে৷ অভিযোগ, প্রথমও দ্বিতীয় স্ত্রীও অভিযুক্ত আধিকারিকের অত্যাচারে পালিয়ে গিয়েছেন৷ অনুমান, পারিবারিক অশান্তির জেরেই তৃতীয় স্ত্রীকে রাস্তায় ফেলে পিটিয়ে খুনের পর চম্পট দেয় অভিযুক্ত ব্যক্তি৷ রবিবার এই ঘটনার তদন্তের পাশাপাশি মৃত মহিলার শিশু কন্যার খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ৷
জানা গিয়েছে, বছর বত্রিশের মৃতের নাম অনন্যা রায় ঘোষ৷ অভিযুক্ত সরকারি আধিকারিক দিবাকর ঘোষ গঙ্গারামপুর আবগারি দপ্তরে কর্মরত৷ দিবাকর ঘোষ ওরফে পান্না আগে দু’দুবার বিয়ে করে ছিল৷ পরে দুই স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়৷ বধূ নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্তকে জেলের ঘানি টানতে হয়৷ যদিও, পরে জামিনে মুক্তি মেলে৷ পাড়া প্রতিবেশীদের সঙ্গে সেভাবে মিশতো না দিবাকর। ফলে তার সম্পর্কে কেউ সঠিক খবর দিতে পারেননি৷ দ্বিতীয় স্ত্রী চলে যাওয়ার পর কলকাতার মেয়ে অনন্যা রায়কে বিয়ে করে দিবাকর। তাঁদের একটি বছর চারেকের কন্যা সন্তান রয়েছে৷
শনিবার রাতেই দিবাকরের স্ত্রী অনন্যার চিৎকার শুনতে পান স্থানীয়রা৷ রবিবার সকালে বাড়ির সামনে রক্তাক্ত অবস্থায় অনন্যাকে দেখতে পায় স্থানীয়রা। গাড়ি বের করার সময় তার স্ত্রী চাপা পড়েছে বলে স্থানীয়দের জানায় সে৷ তবে দিবাকর নয়, স্থানীয়দের একাংশ মহিলাকে উদ্ধার করে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে ভরতি করে৷ হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয়। বিষয়টি জানাজানি হতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে বালুরঘাট থানা-সহ পতিরাম ফাঁড়ির পুলিশ৷ পুলিশি তদন্তে ওই ব্যক্তির বাড়িতে থাকা প্রাইভেট গাড়ির ভেতর ও বাগানে রক্তের দাগ পাওয়া যায়৷ পুলিশের অনুমান, ভারী কিছু দিয়ে মৃতের মাথায় ও মুখে আঘাত করা হয়েছে৷
স্থানীয় বাসিন্দা পঙ্কজ দাস জানান, দিবাকর আগে দুটো বিয়ে করেছিল। খুন হওয়ার আশঙ্কায় প্রথম স্ত্রী পালিয়ে যায়৷ দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার অত্যাচারে চলে যায়৷ দ্বিতীয় স্ত্রীর অভিযোগের তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর অনন্যাকে বিয়ে করে৷ বিয়ের পর থেকেই তৃতীয় স্ত্রীর উপরও নানান ভাবে অত্যাচার করা হত বলে অভিযোগ৷ শনিবারই বাপের বাড়ি থেকে পতিরাম আসেন অনন্যা৷ পিটিয়ে স্ত্রীকে রাস্তায় ফেলে পথ দুর্ঘটনা হয়েছে বলে স্থানীয়দের জানায় অভিযুক্ত৷ চতুর্থ বিয়ের পরিকল্পনা চলছে বলে তাদের অনুমান৷ বালুরঘাট থানার আইসি সঞ্জয় ঘোষ জানিয়েছেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান তাঁরা। গাড়ি ও অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.