জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: দশম শ্রেণির ছাত্রকে মারধরের অভিযোগ স্কুল শিক্ষক পঙ্কজ কুমার বেপারীর বিরুদ্ধে। ছাত্রের পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে বনগাঁ থানার পুলিশ। ধৃতকে বনগাঁ মহকুমা আদালতে নিয়ে গেলে বিচারক তাকে ভর্ৎসনা করে জামিন দিয়ে দেন।
সূত্র মারফত জানা যায়, শনিবার স্কুল চলাকালীন দশম শ্রেণির ছাত্র দুর্জয় তার একটি পেন ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলতে যায়। সেই সময় অভিযুক্ত শিক্ষক পঙ্কজ কুমার বেপারী ক্লাসে চলে আসায় পেনটি ফেলার সময় তার পায়ে গিয়ে লাগে। এরপরই শিক্ষক পঙ্কজ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ও দুর্জয়কে অত্যধিক মারধর করেন বলে অভিযোগ ওঠে। বাকি ছাত্ররা জানায়, পঙ্কজ দুর্জয়কে ধরে কিল চড় মারতে শুরু করেন। অন্য শিক্ষকেরা পরে গিয়ে ছাত্রটিকে উদ্ধার করেন। ততক্ষণে মারের চোটে দুর্জয় জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তার মাথায় জল ঢেলে শুশ্রূষা করার অনেক পরে জ্ঞান ফেরে দুর্জয়ের৷ স্কুল থেকে ছাত্রের বাবা দেবাশিসকে খবর দিলে তিনি স্কুলে অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলতে যান। তাঁর অভিযোগ, শিক্ষক পঙ্কজ কুমার বেপারী তাঁর সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করেন ও অশালীন ভাষায় কথা বলেন। এরপর আশঙ্কাজনক অবস্থায় ছাত্রকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করা হয়। তার সিটি স্ক্যান ও এক্স-রে করবার নির্দেশ দেন চিকিৎসক।
আহত ছাত্রের বাবা দেবাশিস পাইক বলেন, “পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে অভিভাবকরাই এর প্রতিবাদ করবেন। আমার ছেলের সঙ্গে উনি যা করেছেন আর যেন ভবিষ্যতে কারও সঙ্গে করতে না পারেন আমি সেটাই চাই।” স্কুলের প্রধান শিক্ষক মনোজ সাহা জানান, “শিক্ষকের আচরণ নিয়ে আগেও অভিভাবকেরা প্রশ্ন তুলেছিল। এ দিনের ঘটনা শিক্ষাদপ্তরকে জানানো হয়েছে। আইন আইনের মতো চলবে।” তবে অভিযুক্ত শিক্ষক পঙ্কজ ব্যাপারীকে এই ঘটনার কথা জিজ্ঞাসা করলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি কাউকে মারধর করিনি৷ মিথ্যা অভিযোগ তুলে আমায় ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।”
অন্যদিকে ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষকের খোঁজ খবর শুরু করে। আজ সকাল ১১টা নাগাদ মতিগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে শিক্ষক পঙ্কজ কুমার বেপারীকে গ্রেপ্তার করে৷ তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, আগেও অভিযুক্ত শিক্ষক মসলন্দপুরের একটি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন৷ অভিযোগ সেখানেও তিনি ছাত্রদের মারধর করতেন৷ পরিবারের লোকজনের সঙ্গে তিনি দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ। বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ছাত্রদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগে তাকে কয়েকবার সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল। এরপরেও তিনি ছাত্র পেটানো বন্ধ করেনি বলে অভিযোগ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.