ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: দলিতদের যে বিজেপি সম্মান করে, তা তুলে ধরতেই বাঁকুড়ার আদিবাসী বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সারতে গিয়েছিলেন অমিত শাহ (Amit Shah)। সত্যিই কি দলিতদের জন্য ভাবে গেরুয়া শিবির? সকলের মনে এ্র প্রশ্ন জাগাতে পালটা দিল ঘাসফুল শিবির। ঘরে ঘরে ফোন করে তৃণমূলের তরফে মনে করিয়ে দেওয়া হল হাথরসে দলিতকন্যার পরিণতির কথা!
বাঁকুড়ার (Bankura) চতুর্ডিহি গ্রামের ওই আদিবাসী বাড়িতে তখন সবে পাত পড়েছে স্বরাষ্টমন্ত্রীর। শুরু করেছেন খাওয়া। টিভির পর্দায় সকলের চোখ আটকে। বুঝিয়ে দিচ্ছেন দলিতদের কতটা শ্রদ্ধা করে তাঁর দল। সম্মান দেয় ঘরের লোকের মতো। ঠিক তখনই এল ফোনটা। ওপারের কণ্ঠ মনে করিয়ে দিল দলিত সমাজের উপর অত্যাচার, দলিতকন্যাকে সমাজের উচ্চশ্রেণির হাতে গণধর্ষিতা এবং খুন হওয়ার পরপর ঘটনাগুলো। এক ঝটকায় ছবিগুলো চোখের সামনে আসতে শুরু করল সকলের।
উত্তর শহরতলি বাগুইআটির বাসিন্দা এক মধ্যবিত্ত ব্যক্তির কথায়, “আচমকাই ফোনটা এল। টিভিতে তখন দেখছি অমিত শাহ খাচ্ছেন। অচেনা নম্বর। হঠাৎ যেন ঝটকা লাগল। সামনে থেকে শাহের ছবি সরে গিয়ে হাথরসের ওই মেয়েটার জ্বলন্ত চিতার ছবি সামনে চলে এল।” এই বাগুইআটির আদর্শপল্লিতেই শুক্রবার এক মতুয়া পরিবারে মধ্যাহ্নভোজ করার কথা শাহের। তবে শুধু বাগুইআটি নয়, বাঁকুড়ার বহু আদিবাসী ও অন্যান্য পরিবারের মতো অন্যান্য জেলার আরও একাধিক এলাকায় অসংখ্য পরিবারে এদিন পরপর রের্কডেড ভয়েসে এই ফোন গিয়েছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে। বিশেষ করে যেসব এলাকায় মতুয়া, আদিবাসী-সহ সমাজের পিছিয়ে পড়া সমাজের মানুষের বাস। “ঠিক এটাই দরকার ছিল”, বললেন তৃণমূলের এক রাজ্য নেতা। তাঁর কথায়, “অমিত শাহ যখন রাজ্যে এসে মিথ্যা দলিত-প্রীতির নাটক করবেন, আমরা সত্যিটা সকলকে মনে করিয়ে দেব।” একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, “দেশের মানুষ প্রত্যেকটা ঘটনা জানেন। হাথরসের ক্ষত এখনও তাজা। একের পর এক ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশে তারপরও….। অমিত শাহের রাজ্য গুজরাটেই এমন ছবি বারবার চোখে পড়েছে। আর ওরা তো বাংলা-বিরোধী। সেটাও সম্প্রতি বিহারে দুর্গাপুজোর বিসর্জনের শোভাযাত্রার সময় মানুষ দেখেছে। বাংলায় এসে বহিরাগতদের এই নাটক তাই কারও বুঝতে অসুবিধা হয়নি।”
অমিত শাহের ভোজনের মুহূর্তেই তাঁকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূলের অধিকাংশ নেতৃত্ব। টুইটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিঁধেছেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, নুসরত জাহান। শাহকে ‘মিথ্যেবাদী’ বলে কটাক্ষ করেন বসিরহাটের সাংসদ। টুইটে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন, “অমিত শাহজি আপনার গোটা ভারতবর্ষের ধারণা কি আদিবাসীদের বাদ দিয়ে? তা হলে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে গত বছর তাদের উপর অত্যাচারের আট হাজার অপরাধের ঘটনা ঘটল কী করে? আপনারা সব ক’টি সামলাতে ব্যর্থ।” শাসকদলের তরফে শাহের বিরোধিতায় তুলে ধরা হয়েছে একটি স্লোগান। ‘পাজল’ সমাধান করতে পারলে বোঝা যাবে স্লোগানটি। নানা অবিন্যস্ত অক্ষরের মধ্যে ফুটে রয়েছে দু’টি শব্দ, ‘বাংলা-বিরোধী’।
In just a year, atrocities against STs quintupled in BJP-led UP & brutal rape of a Dalit girl in Hathras is still fresh in our minds. Rather than having fake appeasement meals, @AmitShah Ji why don’t you speak up on actual issues that matter the community. #BanglaBirodhiAmitShah
— Abhishek Banerjee (@abhishekaitc) November 5, 2020
I see LIAR!
And can only think of all the blatant LIES that Shri @AmitShah has repeatedly fooled our country with! People of Bengal will never forget your propaganda, Mr. Shah!#BanglaBirodhiAmitShah https://t.co/QimU0LYV7y
— Nusrat Jahan Ruhi (@nusratchirps) November 5, 2020
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.