দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: সুপার সাইক্লোন আমফানের তাণ্ডবের পর কেটে গিয়েছে বেশ কয়েকটা দিন। চারিদিকে তার ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে সুন্দরবনবাসী। কেউ সরকারি ত্রাণ পেয়েছে, আবার কেউ তা পাননি। লকডাউনের ফলে কাজ হারিয়ে অনেকেই অভুক্ত অবস্থায় রয়েছেন। তার উপর ফিরতে শুরু করেছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। এর ফলে দিন দিন বাড়ছে অভুক্ত মানুষের সংখ্যা। আর এইসব অভুক্ত মানুষদের মুখে খাবার তুলে দিতে এবার কলকাতা থেকে সুন্দরবনে এলেন রবিনহুড আর্মির সদস্যরা।
এদিন তাঁরা সুন্দরবনের প্রত্যন্ত দ্বীপ রায়মঙ্গল নদী ও মরিচঝাপি জঙ্গলের পাড়ে অবস্থিত পুইজালি ও কুমিরমারি গ্রামে প্রায় হাজার মানুষের মধ্যে বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন। আমফানের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এই সব দ্বীপগুলির। রায়মঙ্গল নদীর জলে ভেসে গিয়েছে পুরো দ্বীপ অঞ্চল। নোনাজল এখনও সেখানে জোয়ার-ভাটা খেলছে ঘরবাড়ি ও জমির উপর দিয়ে। আর তাই সেই সব মানুষদের মুখে যাতে দু’বেলা দু’মুঠো খাবার পৌঁছায় তারই ব্যবস্থা করলেন রবিনহুড আর্মির সদস্যরা। ডাল, সোয়াবিন, বিস্কুট-সহ বিভিন্ন সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয় এইসব দুর্গত মানুষদের কাছে।
রবিনহুড আর্মির পক্ষ থেকে সৈয়দ মনজুর রহমান বলেন, “লকডাউনের জন্য আমাদের বয়স্ক মানুষের পরিষেবা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। তার মধ্যে হঠাৎই আমফানের তাণ্ডব চারিদিকে। আর তাই বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে আমরা পৌঁছে গেছি সুন্দরবনের প্রত্যন্ত দ্বীপে। যেখানে অধিকাংশ এলাকাতেই এখনও সেইভাবে ত্রাণ পৌঁছায়নি। আমরা মানুষের মধ্যে খাবার তুলে দিতে তাই এসেছি সুন্দরবনে। আগামী দিনে আরও দুটি দ্বীপে আমরা বেছে নিয়েছি এই পরিষেবা দেওয়ার জন্য। পর্যায়ক্রমে আরও মানুষের মধ্যে আমরা খাওয়ার বিলি করতে থাকবো।”
কলকাতা ও জেলার হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ দীর্ঘদিন ধরে। হোটেল ও রেস্তোরাঁর বেঁচে যাওয়া খাবার নিয়ে প্রতিদিন কলকাতার রাজপথে বহু মানুষের মধ্যে খাওয়া তুলে দিয়ে আসছে রবিনহুড আর্মি। স্টেশনে ও ফুটপাতে থাকা মানুষগুলোর খাবারের যোগান দিত এই আর্মির সদস্যরা। লকডাউনের ফলে বন্ধ সেই সমস্ত কাজ। ফলে এখন নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে রান্না করা খাবার বিলি করছেন সর্বত্র। তাছাড়া আমফান বিধ্বস্ত সুন্দরবনের মানুষের মধ্যে আলাদা করে শুকনো খাবার ও ত্রাণ সামগ্রী বিলি শুরু করল তারা। এর ফলে উপকৃত হবেন সুন্দরবনের হাজার হাজার মানুষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.