Advertisement
Advertisement

Breaking News

East Bardhaman

আসেনি আবাসের টাকা, পুড়ে যাওয়া ঘরে বাস বৃদ্ধর, ‘দেবদূত’ হয়ে এলেন পুলিশকর্তা

বৃদ্ধের অবস্থার কথা জেনে পাশে দাঁড়ালেন ভাতার থানার ওসি প্রসেনজিৎ দত্ত। নিজের টাকায় বানিয়ে দিলেন ঘর। দুবেলার খাবারের ব্যবস্থাও করেছেন তিনি।

The OC of Bhatar PS becomes saviour by building house for a poor man
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:March 2, 2024 8:29 pm
  • Updated:March 2, 2024 9:30 pm  

ধীমান রায়, কাটোয়া: মাটির গাঁথনির ঘর। ছেঁড়া ত্রিপলের ছাউনি। অন্ধকার এক চিলতে ঘর। ওই একফালি ঘরে পোষা ছাগলের সঙ্গে বাস। কোনও দিন খাবার জোটে। আবার কোনও দিন জোটে না। বয়সের ভারে নুইয়ে পড়েছে শরীর। হারিয়েছেন কাজ করার ক্ষমতা। আবাস যোজনার (PM Awas Yojona)তালিকায় রয়েছে নাম। কেন্দ্র রাজ্যের দড়ি টানাটানিতে আসেনি সেই টাকা। এমনাবস্থায় দিন কাটছিল বছর সত্তরের মানিক বিশ্বাসের। তাঁর করুণ অবস্থার কথা জেনে পাশে দাঁড়ালেন ভাতার থানার ওসি প্রসেনজিৎ দত্ত। নিজের টাকায় বানিয়ে দিলেন ঘর দুবেলার খাবারের ব্যবস্থাও করেছেন তিনি।

পূর্ব বর্ধমানের ভাতার (Bhatar) বাজার এলাকায় কলপুকুর কাছে থাকেন ৭০ বছরের মানিকবাবু। পুকুরপাড়ে মাটির ছোট্ট এককুঠুরি ঘরে ছিল তাঁর বাস। ঘরের সামনে ছিল একটি চালা। কয়েক বছর আগে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বৃদ্ধের ছেলে। দুবছর আগে মারা যান মানিকবাবুর স্ত্রীও। দুই মেয়ের  বিয়ে হয়েছে দূরে। খোঁজ রাখেন না তারা। বয়সের ভারে সেভাবে কাজ করতেও পারেন না মানিকবাবু। এর মধ্যে  বাসের মাটির ঘরটি কয়েক বছর আগেই ঝড়জলে ভেঙে যায়। ত্রিপল টাঙিয়ে থাকতে শুরু করে তিনি। ঘরের সামনে ছাগল থাকার চালাতেও  আগুন লাগে গতবছর।  তার পর থেকেই  চালা ঘরে  ত্রিপলের তলায় পোষ্যদের নিয়ে থাকছিলেন মানিকবাবু।

Advertisement

[আরও পড়ুন:বামেদের বসিরহাট SP অফিস অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার, রাস্তায় বসে বিক্ষোভ মীনাক্ষী-দীপ্সিতাদের]

এত কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে তাঁর দিকে প্রশাসনের চোখ পড়েনি বলে অভিযোগ। মানিকবাবুর পাশেই থাকেন ভাতার থানার এক সিভিক ভলান্টিয়ার। তাঁর মাধ্যমে এই খবর যায় ওসি প্রসেনজিৎ দত্তর কানে। ওসি নিজে এসে দেখেন বৃদ্ধের অবস্থা। তারপর তিনি নিজের খরচে অ্যাসবেসটস ছাউনি, চায়না পিলারের একটি ঘর তৈরি করে দেন। শোয়ার জন্য তক্তা, পরনের পোশাকও কিনে দেন ওসি। শুধু তাই নয় ওসি মানিকবাবুর দুবেলা খাবারের ব্যবস্থাও করে দিয়েছেন।এ কথা নিজেই জানিয়েছেন বৃদ্ধ। এখন ভাতার থানার ক্যান্টিন থেকেই দুবেলা খাবার পাচ্ছেন মানিকবাবু।

[আরও পড়ুুন:তিনদিনের ব্যবধানে ফের বঙ্গে মোদি, তৃণমূলের ব্রিগেডের দিনই জলপাইগুড়িতে সভা?]

মানিক বিশ্বাস বলেন, “আমার ঘর পড়ে যাওয়ার পর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কয়েকবার ছবি তুলে নিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু কিছু ব্যবস্থা হয়নি। এমনকি সরকারিভাবে কোনও সহযোগিতা পাইনি। বড়বাবু আমার আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দিলেন।” যদিও ভাতার পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অমিত হুই বলেন,” মানিক বিশ্বাসের বাড়িতে আমি একাধিকবার গিয়েছি। সরকারি আবাস যোজনার চূড়ান্ত তালিকায় ওনার নাম আছে। কেন্দ্র আবাস যোজনার অনুদান ছাড়লেই উনি পেয়েও যাবেন। এছাড়া ওই বৃদ্ধ বার্ধক্যভাতা পান। এটাও পঞ্চায়েতের জন্যই হয়েছে।”

পূর্ব বর্ধমান (East Bardhaman) জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধক্ষ্য শান্তনু কোঁয়ার বলেন, “ভাতার থানার ওসি যে ভূমিকা নিয়েছেন সেটা অবশ্যই প্রশংসনীয়। তবে ওই বৃদ্ধ কোনও সরকারি সহায়তা পান না এই ধরনের অপপ্রচার ঠিক নয়। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি উনি বার্ধ্যক্যভাতা পান। বিনা পয়সায় রেশনও পান। আবাস যোজনার অনুদানও পেয়ে যাবেন।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement