টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: ছেলে ও পুত্রবধূর অত্যাচারে বাড়ি ছাড়তে হয়েছিল। ভাবতে পারেননি নিজের কষ্টে তৈরি ভিটেতে আর কোনওদিন ফিরতে পারবেন। কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশে অবশেষে মাথার উপর ছাদ ফিরে পেলেন বাঁকুড়ার স্কুলডাঙ্গার অশিতিপর বৃদ্ধ দম্পতি বুরহান আলি ও মুমতাজ বেগম। পুলিশের তত্বাবধানে সোমবার বাড়িতে ফিরেছেন তাঁরা।
বুরহান আলি একসময় বাঁকুড়া জেলা পরিষদের কর্মী ছিলেন। স্ত্রী মুমতাজ বেগম ছিলেন বাঁকুড়ার এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে। কষ্ট করে ছেলে আসমান আলিকে পড়াশোনা করিয়ে বড় করেছিলেন। বিয়েও দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপর থেকেই শুরু হয় সমস্যা। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারি বৃদ্ধ বাবা ও মা এর উপর শুরু হয় অত্যাচার। কষ্টে বড় করা ছেলে ও তাঁর স্ত্রী ক্রমাগত বৃদ্ধ দম্পতিকে বাড়ি ছাড়া করার চেষ্টা শুরু করে। লাভ না হওয়ায় শুরু হয় অত্যাচার। জলের লাইন কেটে দেওয়া, শৌচাগার ব্যবহার করতে বাধা দেওয়া হয় দিনের পর দিন। বৃদ্ধ দম্পতিকে খুনের হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এরপরই বাধ্য হয়ে বাড়ি ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন বৃদ্ধ দম্পতি। শেষমেশ আশ্রয় মেলে পুরুলিয়ায় মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে। সেখানে থেকেই ছেলে ও পুত্রবধূকে শিক্ষা দিতে লড়াই শুরু করেন বুরহান ও মুমতাজ।
বাঁকুড়া সদর থানার পাশাপাশি দ্বারস্থ হন কলকাতা হাইকোর্টের। গত ১৭ জুন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মন্থা ছেলে ও পুত্রবধূকে বের করে বৃদ্ধ দম্পতিকে নিজের বাড়িতে ফেরানোর নির্দেশ দেয় বাঁকুড়া সদর থানাকে। সেই মোতাবেক বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ ছেলে ও পুত্রবধূকে বাড়ি ছাড়ার নোটিস দেয়। তাঁরা বাড়ি ছাড়লে সোমবার বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ বৃদ্ধ দম্পতিকে তাঁদের নিজের বাড়িতে পৌঁছে দেয়। বাড়িতে নজর রাখার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশও। দেড় বছর বাড়ি ছাড়া থাকার পর নিজের মাথার ছাদ ফিরে পাওয়ায় চোখে মুখে স্বস্তির ছাপ বৃদ্ধ দম্পতির। বাবা মা কে নিজের বাড়িতে ফিরিয়ে দিতে পেরে খুশি মেয়ে শম্পা বেগমও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.