প্রতীকী ছবি।
সৌরভ মাজি, বর্ধমান: বর্ধমানে নির্যাতিতা বৃদ্ধাকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দেখতে গিয়ে বিতর্কের জড়িয়ে ছিল বাম প্রভাবিত একটি গণসংগঠন। জোর করে হাসপাতালের সিসিইউতে ঢোকা, নির্যাতিতার সঙ্গে ছবি তোলার মত বেআইনি কার্যকলাপের অভিযোগ উঠেছিল সংগঠনের নেতা-নেত্রীদের বিরুদ্ধে৷ যা নিয়ে পুলিশে এফআইআর পর্যন্ত দায়ের করা হয়৷ এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের বিতর্কে পূর্ব বর্ধমান জেলা সিপিএম৷ গলসিতে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় মৃতার পরিচয় ও ছবি দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়েছে দলের ফেসবুক পেজে। যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। নির্যাতিতার নাম, পরিচয়, ছবি এইভাবে প্রকাশ্যে আনায় সিপিএমের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার নেওয়ার দাবি উঠেছে ।
গত সপ্তাহে গলসির হিট্টা গ্রামে সেচখালের ধার থেকে দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর দেহ উদ্ধার হয়। তিনদিন ধরে নিখোঁজ ছিল সে। তাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ উঠেছে৷ পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ৷ পরিবারের লোকেদের সঙ্গে দেখা করতে নিহতের বাড়িতেও গিয়েছিলেন সিপিএমের মহিলা সংগঠন সারা ভারত মহিলা সমিতির জেলা নেত্রী মণিমালা দাস, পুষ্প দে, কাজি জৈবুন্নেসা, ছাত্র নেতা মনসিজ হোসেনরা । পরিজনদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। আর সেই সংক্রান্ত ছবিও যথারীতি পোস্ট করা হয় সিপিএমের ফেসবুক পেজে। আর তাতেই বিতর্ক তুঙ্গে।
[‘আমার ছবি না তুলে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি তুলুন’, লং মার্চে মেজাজ হারালেন সূর্যকান্ত]
অভিযোগ, জেলা সিপিএমের ফেসবুক পেজে পরিচয় প্রকাশ করাই শুধু নয়, নির্যাতিতার ছবিও দেওয়া হয়েছে। যা বেআইনি তো বটেই, চূড়ান্ত অমানবিক ও অনৈতিক। তৃণমূলের নেতা তথা জেলা পরিষদের সহসভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, “ দলটায় ঘুণ আগেই ধরেছিল। নেতাদের এখন সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়া পাওয়া যায় না। তাই সোশ্যাল মিডিয়াতেও এমন ভুলভাল কাজ করছে। ধর্ষণের মত ঘটনায় নির্যাতিতার নাম-পরিচয় গোপন রাখার কথা আইনে বলা আছে। সেটাও জানে না সিপিএম।” শাসকদলের ওই নেতার অভিযোগ, ফের একবার ওই পরিবারকে নির্যাতনের শিকার হতে হল সিপিএমের এই অনৈতিক কাজে। সিপিএমের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন তিনি৷
[সন্তানদের অবহেলায় আত্মহত্যার চেষ্টা, প্রৌঢ়াকে বাঁচালেন সিভিক ভলান্টিয়ার]
জেলা পুলিশও সিপিএমের এই বেআইনি কাজের বিষয়ে খোঁজ শুরু করেছে। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) তথা জেলা সাইবার সেলের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক প্রিয়ব্রত রায় বলেন, “আমরা আইনগত সবদিক খতিয়ে দেখছি। এই ধরণের ঘটনায় কোনও নির্যাতিতার নাম এইভাবে পাবলিক ফোরামে প্রকাশ করে দেওয়া চরম অনৈতিক কাজ।” এই বিষয়ে জেলা সিপিএম সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিকের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা হলেও পাওয়া যায়নি। জেলা সিপিএমের নেতা তথা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আভাস রায়চৌধুরি বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ার এই ধরণের পোস্টের বিষয়ে আমরা কিছু জানা নেই। তবে আমি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।” যদিও, বিতর্ক দানা বাঁধতেই ফেসবুকে দেওয়া বিতর্কিত পোস্টটি থেকে নির্যাতিতার ছবিগুলি তুলে দেওয়া হলেও নাম-পরিচয় যথারীতি থেকে গিয়েছে আগের মতোই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.