ছবি: মুকুলেসুর রহমান
সৌরভ মাজি, বর্ধমান: ম্যাসাঞ্জোর ড্যামের নীল-সাদা রং মুছে দিয়েছে গেরুয়া শিবির। এই নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। চলছে রাজনৈতিক চাপানউতোর৷ এরই মাঝে এবার গেরুয়া ছেড়ে নীল-সাদায় আস্থা রাখলেন ভোলেবাবার ভক্তরা৷ গেরুয়া রঙের পোশাক ছেড়ে নীল-সাদা পোশাকে সেজে তাঁরা রওনা হলেন তারকেশ্বরের পথে। এটা কি কোনও বিশেষ ইঙ্গিত, না কি অন্যকিছু? যা নিয়ে জোর চর্চা বর্ধমানে। ‘টক-অফ দ্য টাউন’ হয়ে উঠেছে ভক্তকুলের এই রং বদলে।
কাঁধে সুসজ্জিত বাঁক। ঝুমঝুম শব্দ। গেরুয়া পোশাক। শ্রাবণ মাসে বিভিন্ন স্টেশনে দলবদ্ধভাবে এইভাবেই দেখা যেত ভোলেবাবার ভক্তদের। কিন্তু রবিবার বর্ধমান স্টেশনে ভক্তদের একটা বড় অংশের পোশাকের রং দেখে অনেকেই চমকে উঠেছেন। ভক্তের দলের পোশাকে এবার নীল-সাদার ছোঁয়া। গেরুয়া রঙের আচমকা পরিবর্তনে অনেকেরই ভ্রম হচ্ছে এবার। গেরুয়া ত্যাগ করে ভক্তকুলের বসন নীল-সাদা হওয়ায় কেউ কেউ রাজনীতির গন্ধ খোঁজার চেষ্টা করছেন। রাজনীতির ময়দানে গেরুয়া শিবির কাদের বলা হয় তা সকলেরই জানা। উল্লেখের প্রয়োজন হয় না। নীল-সাদা কাকে ইঙ্গিত করে রাজ্যে তা-ও জানা আছে।
শ্রাবণ মাসজুড়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তরা তারকেশ্বরে যান শিবের মাথায় জল ঢালতে। এবারও প্রচুর ভক্ত যাচ্ছেন। সোমবার বাবার মাথায় জল ঢালতে বেশি ভিড় হয়ে থাকে। তাই রবিবার বিভিন্ন স্টেশনে ভক্তদের সমাগম হয়েছিল প্রচুর সংখ্যায়। বর্ধমানে ট্রেন ধরে শেওড়াফুলি স্টেশনে নেমে তারকেশ্বর যান অনেকে। আবার অনেকে কর্ড লাইনে কামারকুণ্ডুতে ট্রেন বদল করে তারকেশ্বর যান। এদিন বর্ধমান-গুসকরা-সহ বিভিন্ন স্টেশনে নীল-সাদা পোশাকের ভক্তদের নিয়ে জোর আলোচনা চলেছে। চায়ের স্টল থেকে পান গুমটি, এখন এই নীল-সাদা রঙ নিয়েই জোর আলোচনা। কেউ কেউ বলছেন, তৃণমূল সরকারের নীল-সাদা রং। তাই ভাইয়েরা শিবভক্ত হলেও নীল-সাদাই পছন্দ করেছেন। আবার কেউ কেউ বলছেন, বাবার ভক্তদের মধ্যেও রাজনৈতিক রং লেগে গেল।
বর্ধমান স্টেশনে ধরা গেল নীল-সাদা পোশাকের ভক্তকুলকে। শুধুই কি রাজনৈতিক কারণে গেরুয়া ছেড়ে তাঁরা নীল-সাদা পোশাক পরেছেন? অনেকেরই জবাব ছিল না! বর্ধমানের নীলপুর এলাকা থেকে একদল যুবক নীল-সাদা পোশাকে যাচ্ছিলেন তারকেশ্বর। কাঁধে বাঁক নিয়ে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন বিমল বিশ্বাস, সৌরভ সাহারা। তাঁরা অবশ্য জানাচ্ছেন, দেশভক্ত তাঁরা। তাই নীল পোশাক। বিষয়টি স্পষ্ট হচ্ছিল না অনেকের। তাঁরা খোলসা করলেন পরে। বললেন, “আমাদের দেশের খেলাধুলার জার্সির রং নীল-সাদা। আমরা খেলা ভালবাসি। দেশকে ভালবাসি। তাই নীল-সাদা পোশাক পরেছি।” আরও কয়েকজন ছিলেন নীল-সাদা পোশাকে। তাঁরা অবশ্য জানাচ্ছেন, শিবভক্ত হলেই গেরুয়া রঙের পোশাক পরতে হবে তার কোনও মানে হয় না। নীল-সাদা রং পছন্দ হয়েছে তাই সকলে তা পরেছেন।
পাশাপাশি গুসকরা থেকেও একদল শিবভক্ত এদিন তারকেশ্বর যাচ্ছিলেন। তাঁরাও গেরুয়া পোশাক ত্যাগ করেছেন। তাঁরা অবশ্য নীল-সাদা পোশাক পরেননি। তাঁদের সকলেই ছিলেন সবুজ পোশাকে। এই দলে ছিলেন প্রদীপ যাদব, আশিস বৈরাগ্যরা। তাঁরা জানান, নিজেরাই ঠিক করেছিলেন সকলেই একই রঙের পোশাক পরবেন। যা অন্যদের থেকে আলাদা হবে। হারিয়ে গেলে বা দলছুট হলে তাড়াতাড়ি খুঁজে পেতে সুবিধা হবে। সেই কথা ভেবেই তাঁরা সবুজ পোশাক পরেছেন৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.