সোমনাথ পাল, বনগাঁ: দেবীপক্ষেই জোড়া মৃত্যুর খবরে চাঞ্চল্য ছড়াল সীমান্ত শহর বনগাঁয়৷ অশ্লীল ছবি তুলে লাগাতার ধর্ষণের ঘটনায় আত্মঘাতী হয়েছেন এক যুবতি৷ এমনই অভিযোগ উঠেছে তাঁর জামাইবাবুর বিরুদ্ধে। এদিকে বোনের উপর স্বামীর ধর্ষণের প্রতিবাদ করায় স্ত্রীকেও সে সরিয়ে দিয়েছে বলে উঠেছে অভিযোগ। কার্যত জোড়া খুনের দায়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্ত সৌরভ বিশ্বাস নামে এক যুবককে৷
স্থানীয় সূত্রে খবর, বিয়ের পরই নিজের শ্যালিকার সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে অভিযুক্ত সৌরভ৷ অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি দেখিয়ে শ্যালিকাকে লাগাতার ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে ধৃতের বিরুদ্ধে৷ এর মধ্যেই বোনের উপর স্বামীর অত্যাচারের প্রতিবাদ করেন স্ত্রী৷ অভিযোগ, প্রতিবাদ জানানোর পর থেকে দিনের পর দিন স্ত্রীয়ের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাত সৌরভ৷ চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁ থানার নকপুল সীতানাথপুর এলাকায়৷ ঘটনায় অভিযুক্ত জামাইয়ের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন মৃত গৃহবধূর বাবা বৃদ্ধ অমল মণ্ডল৷ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
[অজানা জ্বরে কামারহাটিতে স্কুল ছাত্রীর মৃত্যু]
পরিবারের অভিযোগ, গত সাত বছর আগে সৌরভ ভালবেসে বিয়ে করে অমলবাবুর বড় মেয়ে অসীমাকে৷ বিয়ের কয়েক বছর পর থেকে অভিযুক্ত শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার শুরু হয় তাঁর মেয়ের ওপর৷ অসীমা ও সৌরভের সংসারে শান্তি ফেরাতে বারকয়েক দুই পরিবারের উদ্যোগে গ্রামে সালিসি সভাও হয়৷ কিন্তু, তাতেও অত্যাচারের মাত্রা কমেনি৷ এরই মধ্যে অসীমার ছোট বোন অঞ্জনা তাঁর বাবাকে জানায়, দিদির ওপর জামাইবাবুর অত্যাচারের জন্য সে দায়ী৷ জামাইবাবু সৌরভের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাঁর৷ এও জানায়, অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাকে তাঁকে লাগাতার ধর্ষণ করত জামাইবাবু৷ বোনের সঙ্গে স্বামীর এই কুকর্মের আঁচ পেয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন অসীমা৷ সেই থেকেই অশান্তির সূত্রপাত৷ পুলিশের অনুমান, দিদির পরিবারে অশান্তি বাড়তে থাকায় ও জামাইবাবুর অত্যাচারে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন বোন অঞ্জনা৷
[মোবাইলের আলোয় দেড় ঘণ্টা অপারেশন, সারমেয়কে বাঁচিয়ে নজির পশুপ্রেমীদের]
অভিযোগ, শ্যালিকার মৃত্যুর পরও স্ত্রী অসীমার ওপর অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে থাকে৷ দিনের পর দিন মেয়ের উপর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে তাঁকে বাড়ি নিয়ে যান অমলবাবু৷ এর পরেই অভিযুক্ত ফোনে শ্বশুরবাড়িতে হুমকি দিতে শুরু করে৷ এরপর, শুক্রবার বাড়িতে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় অসীমার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়৷ আশঙ্কাজনক অবস্থায় অসীমাকে বনগাঁ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন৷ গ্রামবাসীরা জানান, অসীমার মৃত্যুর আগে অভিযুক্ত সৌরভ শ্বশুরবাড়িতে এসেছিল৷ এরপরেই সন্দেহ দানা বাঁধে অমলবাবুর৷ বনগাঁ থানায় মেয়েকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন তিনি৷ পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে৷ ধৃতকে রবিবার বনগাঁ আদালতে তুলে ফের হেফাজতে নেয় পুলিশ৷ ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.