চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: জেলা হাসপাতালে নেই চিকিৎসার জন্য সবচেয়ে জরুরি ওষুধটাই৷ ফলে লকডাউনে ভোগান্তির শিকার আসানসোলের প্রায় তিনশো থ্যালাসেমিয়া রোগী৷ থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তরা আসানসোল জেলা হাসপাতালে রক্ত পেলেও সারা মাসের ওষুধের জন্য ছুটতে হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ কিংবা বাঁকুড়া মেডিক্যালে। কারণ, ওই ওষুধ বাজারে পাওয়া গেলেও তা মহার্ঘ্য। কিন্তু লকডাউনে বর্ধমান বা বাঁকুড়ায় গিয়ে রোগী পরিবারের পক্ষে ওই ওষুধ আনা সম্ভব নয়। কিন্তু ফুরিয়েছে ওষুধ। ফলে চরম সমস্যায় রোগীরা।
থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তের শরীরে নিয়মিত লোহা জমে যায়, আর সেই আয়রণ ওভারলোড কমাতে জরুরি ডিফেরাসিরক্স ট্যাবলেট৷ সেই ওষুধ জেলা হাসপাতালে অমিল বলে ভোগান্তির একশেষ হচ্ছেন আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষরা। নিয়মিত আসানসোল জেলা হাসপাতালে ২৭৩ জন থ্যালাসেমিয়া রোগী রক্ত নেওয়ার জন্য আসেন। কিন্তু তাঁদের ওই ডিফেরাসিরক্স ট্যাবলেট আনতে হয় বর্ধমান কিংবা বাঁকুড়া থেকে। রোগী পরিবারগুলির মধ্যে টুটুল মাজি, মনোরঞ্জন চার, রানু ঘোষ, রবীন বাউরি, মীরা মাজি, কল্পনা মণ্ডলরা বলেন, লকডাউনে ওই ওষুধের যোগান নেই। বাস ট্রেন না চালু হওয়ায় অতদূর থেকে ওই ওষুধ আনাও সম্ভব হচ্ছে না। তাই সরকারের কাছে আমাদের আবেদন জেলা হাসপাতালেই যদি ওই ওষুধের ব্যবস্থা করা হয়।
জানা গিয়েছে, ডিফেরাসিরক্স ট্যাবলেট ৫০, ১০০, ২০০, ২৫০, ৪০০ ও ৫০০ মিলিগ্রামের হয়। ওই ট্যাবলেট নিয়মিত না খেলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে লোহা জমে বিপত্তি অনিবার্য৷ শ্বাসকষ্ট, হার্টের সমস্যা, পেট ফোলা, ত্বকের সমস্যা, খাবারে অরুচি অবশ্যম্ভাবী৷ জেলা হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাস বলেন, “ওই ওষুধ এপ্রিল মে মাস থেকেই আসানসোল জেলা হাসপাতালে পেয়ে যাওয়ার কথা। আমরা জেলাস্বাস্থ্য কর্তাকে আবেদন করেছিলাম। সব কিছু ঠিক হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু লকডাউনের জন্য ওই প্রক্রিয়া আটকে যায়। আরও একবার রোগীর সংখ্যা নির্নয় করে আমরা ওই আবেদন করব যেন শীঘ্রই ওই ওষুধ হাসপাতালে পাওয়া যায়।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.