দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: অদম্য জেদের কাছে হার মানল ব্যাধি। থ্যালাসেমিয়ার মতো মারণরোগের সঙ্গে লড়াই করেও উচ্চ মাধ্যমিকে ৬৪৭ নম্বর পেয়ে এখন তারকেশ্বর গার্লস স্কুলের অনন্যা আদক এলাকার গর্ব। তারকেশ্বর সন্তোষপুর অঞ্চলের বিষ্ণুবাটি গ্রামের অনন্যা ভবিষ্যতে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু একদিকে সংসারে আর্থিক অনটন, অন্যদিকে দূরারোগ্য এই ব্যাধির চিকিৎসার খরচ নিয়ে দিশেহারা পরিবার। মেয়ের পড়াশোনার খরচ কেমন করে চালাবেন, তা ভেবে পান না বাবা বিজয়কৃষ্ণ আদক।
[ অলচিকি ভাষায় পরীক্ষা দিয়ে সাফল্যের শীর্ষে সীমা, হতে চায় আইনজীবী ]
মাত্র ৬ বছর বয়সে অনন্যার থ্যালাসেমিয়া ধরা পড়ে। প্রায় মৃত্যুর মুখ থেকে সেদিন ফিরে আসে অনন্যা। ছোট থেকেই পড়াশোনা ও জানার প্রতি আগ্রহ তার। স্কুলের পরীক্ষায় সবসময় তার স্থান থাকত এক থেকে দশের মধ্যে। বাবা বিজয়কৃষ্ণ আদক চাষাবাদ করে যেটুকু রোজগার করেন তাতেই সংসার চালাতে হয়। ছেলে নবম শ্রেণিতে পড়ে। বিজয়বাবু জানান, মেয়ের উচ্চ মাধ্যমিকের রেজাল্টে ভীষণ খুশি তিনি। কিন্তু দূরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত সে। এর মধ্যেই লড়াই করে যদি জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়, তবে বাবা হিসেবে সবচেয়ে খুশি হবেন তিনিই। কিন্তু একদিকে সংসারের খরচ, অন্যদিকে চিকিৎসার খরচ কী করে চালাবেন, তা ভেবে পাচ্ছেন না। তাই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন। অনন্যার মা কবিতা আদক জানান, মেয়ে চোখের সামনে রয়েছে, এতেই তাঁর আনন্দ। এরপর কেউ যদি ওর স্বপ্নপূরণের জন্য এগিয়ে আসে, তবে মেয়েটাও জীবনের সঠিক পথটা বেছে নিতে পারবে।
[ সম্পত্তির লোভে যুবককে খুন দুই দিদির, চাঞ্চল্য গাইঘাটায় ]
অনন্যা গান শেখে। রেডিও শুনে নাটক আর গানের মধ্যে দিয়ে নিজের জীবনকে উপলব্ধি করে। মেধাবী পড়ুয়া, চিরকাল মানুষ বেঁচে থাকে না। একদিন তো সকলকে চলে যেতে হবে। তাই মারণরোগে যারা আক্রান্ত, তাদের উদ্দেশ্যে অনন্যার বার্তা, ভয় না পেয়ে যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন নিজের স্বপ্নপূরণের জন্য এগিয়ে যেতে হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.