ফাইল ছবি।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নীল আকাশে পেঁজা তুলোর মতো মেঘ ভাসছে ঠিকই, কিন্তু শরতের আবেশ নেই। মনোরম আবহাওয়া তো দূরের কথা, দিনভর বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির জেরে রীতি মতো শ্রাবণের আবহ। রোদ-বৃষ্টির লুকোচুরি আর আর্দ্রতার ফাঁসে অস্বস্তিকর পরিবেশ। আর এই অস্বস্তিকর পরিস্থিতি থেকে আপাতত মুক্তি নেই বলেই সাফ জানাল আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর।
[ আরও পড়ুন: ‘বাংলার জন্য নির্লজ্জভাবে পক্ষপাতিত্ব করতেও রাজি’, বনসৃজনের ফান্ড নিয়ে বললেন বাবুল ]
কেন? কারণ, উত্তর ওড়িশা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ দানা বেঁধেছে। যার জেরে আগামী দিন তিনেক দক্ষিণবঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। শনিবার হাওয়া অফিসের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস বলেন, “উত্তর ওড়িশা লাগোয়া বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। তার জেরে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বৃষ্টি হবে।” আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও কালিম্পং-এ। অন্যদিকে, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূলবর্তী এলাকায় ঘণ্টায় ৪৫ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। যার জেরে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ওই এলাকায় মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। দক্ষিণে অবশ্য ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা কম। কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি চলবে।
[ আরও পড়ুন: এবার টোটো পাড়াতেও ঘোরার সুযোগ, পর্যটকদের জন্য বাড়ল জঙ্গল সাফারির সীমানা ]
হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, অন্য বছরগুলিতে পুজোর আগে শরতের হিমেল পরশ চলে আসে বাতাসে। কিন্তু বর্ষা পিছিয়ে যাওয়ায় এ হেন বিপত্তি। প্রসঙ্গত, ১৪ বছরের রেকর্ড ভেঙে চলতি বছর দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা ঢুকেছে ২১ জুন। সময়ের ঠিক ১৩ দিন পরে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, আগে বর্ষার বেশিটাই হয়ে যেত আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে। ভাদ্রের মাঝামাঝি কাটিয়ে বাংলা থেকে বিদায় নিত বর্ষা। কিন্তু নতুন পরিস্থিতিতে দেখা যাচ্ছে, বর্ষা পিছিয়ে গিয়েছে অনেকটাই। একই সঙ্গে হয়েছে দীর্ঘায়তও। আগামী কয়েক দিন তাপমাত্রা এর আশপাশেই থাকবে। তবে বাতাসে জলীয় বাষ্প থাকার কারণে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। শনিবার সকাল থেকেই নিম্নচাপের প্রভাব পড়েছে কলকাতা-সহ সংলগ্ন উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। কখনও মেঘলা, তো কখনও আবার ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি হয়ে চলেছে। ফলে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দুই-ই সামান্য কমেছে। তাপমাত্রার তারতম্যের জেরে ঘরে ঘরে বাড়ছে বিভিন্ন অসুখ। কারণ দিনের তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করছে ৩২-৩৫ ডিগ্রির আশপাশে। রাতের তাপমাত্রাও ২৭ ডিগ্রির নিচে নামছে না।
[ আরও পড়ুন: হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে মৃতদেহে ঝাড়ফুঁক, পরিবারের কুসংস্কারের বলি একরত্তি শিশু ]
আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই সময় রাতের তাপমাত্রা নেমে আসে ২৫ ডিগ্রির কাছাকাছি। কিন্তু বাতাসে জলীয় বাষ্প রয়ে যাওয়ায় রাতের তাপমাত্রা নিচে নামছে না। চিকিত্সকরা জানাচ্ছেন, এই আবহাওয়ায় বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস সক্রিয় হয়ে ওঠে। ঘরে ঘরে সর্দি-কাশি-গলাব্যথা-জ্বরে নাজেহাল আট থেকে আশি। বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশুদের শারীরিক সমস্যা বেড়েছে অনেকটাই। ঠান্ডা-গরমে সর্দি, কাশি ভয়াবহ আকার নিয়েছে। শহর ও শহরতলিতে দেখা দিয়েছে ভাইরাল জ্বরের সঙ্গে ব্যাকটেরিয়াজনিত পেটের অসুখ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.